Advertisement
Advertisement
Indian football team

মেয়ের জোড়া গোলেই এশিয়ান কাপে ভারত, সঙ্গীতার সাফল্য়ে তৃপ্ত হাসপাতালের সাফাইকর্মী মা

গান্ধী হাসপাতালের কোয়ার্টারের মাঠেই সঙ্গীতা ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন।

Mother of Indian football team player Sangita Basfore, is proud of her daughter

সঙ্গীতার মা

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:July 7, 2025 8:20 pm
  • Updated:July 7, 2025 8:20 pm  

প্রসূন বিশ্বাস: ম্যাচ শেষ হওয়ার পর হোটেলে ফিরে শনিবার রাতেই মা ফুলঝুরি বাসফোরকে ফোন করেছিলেন সঙ্গীতা। অল্প কথায় বলেছিলেন, “মা জিতেছি।” এই রকম ফোন তো হামেশাই আসে। মেয়ে ম্যাচ জিতলেই আসে। শনিবার রাতে কল্যাণীর গান্ধী হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে খেতে বসেছিলেন তিনি। খেতে খেতেই কথা বলেন মেয়ের সঙ্গে। তখনও বুঝতে পারেননি তাঁর মেয়ের জোড়া গোলের সুবাদেই দেশের মহিলা ফুটবল টিম টানা চার ম্যাচ জিতে পৌঁছে গিয়েছে এশিয়ান কাপ প্রতিযোগিতার মূলপর্বে। এশীয় স্তরের এই কুলীন ফুটবল প্রতিযোগিতার মূলপর্বে এবার সুনীল ছেত্রীরা আদৌ যেতে পারবেন কি না, তা কোটি টাকার প্রশ্ন। তখন মেয়েদের দল দাপট দেখিয়ে মূলপর্বে। সেই মেয়েদের দলের অন্যতম মুখ সঙ্গীতা।

Advertisement

গান্ধী হাসপাতালে সাফাই কর্মী হিসাবে কাজ করেন সঙ্গীতার মা ফুলঝুরি বাসফোর। বাবা কয়েক বছর আগেই প্রয়াত। শনিবার রাতে যখন মেয়ে ইতিহাস তৈরি করছেন, তখন তাঁর মা হাসপাতালে কর্তব্যরত। মেয়ের খেলা দেখেননি। এদিন সকাল থেকেই সঙ্গীতাকে নিয়ে প্রশংসার বন্যা বইছে তাঁর কাছে। অথচ একটা সময় ফুলঝুরি বাসফোর চিন্তা করতেন মেয়ের এই খেলা নিয়েই। নিজেই বলছেন, “ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলাতে আগ্রহ ছিল ওর। কিন্তু যখন বড় হচ্ছিল, তখন আমি চিন্তায় ছিলাম। মেয়ে আবার ফুটবল খেলে নাকি। লোকে কী বলবে। কিন্তু আমার প্রতিবেশীরাই বলেছিল, ও খেলবে। তারপর থেকে ওই চিন্তা চলে গিয়েছে। এখন ভালো লাগছে যে সবাই মেয়ের প্রশংসা করছে।”

এই গান্ধী হাসপাতালের কোয়ার্টারের মাঠেই সঙ্গীতা ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন। তাঁর কোচ বিজয় বাসফোর বলেন, “আমার দূর সম্পর্কের ভাগ্নি হয়। ওই কোয়ার্টারের মাঠে আমরা ক’জন ক্লাবের ফুটবল প্র্যাকটিস করাচ্ছিলাম। দেখি ছোট্ট সঙ্গীতা বলে লাথি মারছে। বুঝলাম ফুটবল খেলতে পারে। বাড়িতে কথা বলে নিয়ে এলাম। ছেলেদের সঙ্গেই খেলত। মেয়ে বলে আলাদা করে কম অনুশীলন করাইনি। ছেলেরা যা অনুশীলন করত, ও তাই করত। আজ ভালো লাগছে ওর এই কীর্তি দেখে।”

সঙ্গীতার প্রতিবেশী শেরা বাসফোর বলছিলেন, “আমাকে ও দাদু বলে ডাকে। আমাদের কোয়ার্টারের সবাই খুশি। শনিবার আমি পুরো খেলা দেখতে পারিনি। ওর গোল হওয়ার আগেই উঠে গিয়েছি। এখন আফশোস হচ্ছে। তবে রিল্পে দেখেছি অনেকবার।” আর যাঁকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে গান্ধী হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার, সেই সঙ্গীতা শনিবার ম্যাচ খেলে উঠেই বলে দিয়েছেন, “এই অনুভূতি বলে বোঝাতে পারব না। এই সাফল্য পুরো দলের সমবেত প্রচেষ্টার ফল। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করা। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হবে বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন। আমি মাঠে নেমেছি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের জন্য নয়, বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে। ক্ষীণ একটা সম্ভাবনা রয়েছে। এখন তার লক্ষ্য নিয়েই আরও কঠিন লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।” এখন গান্ধী হাসপাতাল কোয়ার্টার অপেক্ষা করে আছে সঙ্গীতার ফেরার। ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরলেই সংবর্ধনা দেবেন প্রতিবেশীরা।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement