Advertisement
Advertisement
Rock Climber

বিভূতিভূষণের বই হাতে ‘চাঁদের পাহাড়’ জয় বঙ্গতনয় জ্যোতিষ্কর! সঙ্গী সাইকেল

'ট্রিবিউট টু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়' লেখা চিরকূট নিয়ে মার্গারিটা শৃঙ্গ ছুঁলেন বাস্তবের 'শংকর'।

Rock Climber from West Bengal touches 'Chander Pahar' inspired by the famouse novel by Bibhutibhusan Bandyopadhyay
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 29, 2025 4:09 pm
  • Updated:July 29, 2025 4:18 pm   

সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: শত শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্বপ্নের মতো শংকরের চোখের সামনে সমস্ত রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল ‘চাঁদের পাহাড়’! ভ্রমণপিপাসু বঙ্গ সাহিত্যিকের কল্পনাপ্রসূত সেই রচনা বাংলা সাহিত্য সম্ভারের এক আকর! এমন রত্নই নদিয়ার করিমপুরের জ্যোতিষ্ক বিশ্বাসকে অনুপ্রেরণা ‘শংকর’ হয়ে ওঠার। স্বপ্ন দেখতেন, ছোট ছোট পায়ে চলতে চলতে একদিন ঠিক ‘চাঁদের পাহড়’ পৌঁছে যাবেন। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হল। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই অমরসৃষ্টি হাতে নিয়েই জ্যোতিষ্ক পৌঁছে গেলেন আফ্রিকার বিখ্যাত রোয়েনজোরি পর্বতে, সঙ্গে একটি চিরকূট, তাতে লেখা – ‘ট্রিবিউট টু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়’। সঙ্গী স্রেফ একটি সাইকেল।

Advertisement
করিমপুরের জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস। নিজস্ব ছবি।

নদিয়ার করিমপুরের জামতলার বাসিন্দা জ্যোতিষ্ক বিশ্বাসের বাবা প্রাক্তন সেনা কর্মী। ভ্রমণের শখ ছোটবেলা থেকেই। বাবার পেশার সুবাদে ঘুরেছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। ভ্রমণপিপাসু সাইকেলপ্রেমী যুবক এর আগে হিমালয় থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় ভ্রমণ করলেও মূল লক্ষ্য ছিল ছোটবেলায় পড়া বিভূতিভূষণের ‘চাঁদের পাহাড়’ ছোঁয়া। গত জুন মাসে নিজের জমানো টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন চাঁদের পাহাড়ের উদ্যেশ্যে। গন্তব্য, রেলওয়ে হেড অফিস, বোম্বাসা, পূর্ব আফ্রিকা। আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে বিভূতিভূষণের ‘শংকর’ এখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘চাঁদের পাহাড়ে’র উদ্দেশে। ঠিক তার শতাব্দী পরে বাংলার ‘শংকর’ সাইকেলে যাত্রা শুরু করেন গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছনোর আগে পেরিয়েছেন আফ্রিকার একাধিক দেশ। দেখা হয়েছে অনেক মানুষের সঙ্গে, হয়েছে পরিচয়ও। খুব সহজেই হয়ে উঠেছেন তাঁদের একজন। বর্ণনা করেছেন একাধিক রোমহর্ষক, বিপদসংকুল অভিজ্ঞতার। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন মানুষখেকো বাঘের নখের ছবি।

ছোটবেলা থেকে ভালোবাসা বলতে সাইকেল আর অ্যাডভেঞ্চারের গল্প। বড় হয়ে সেই ভালোবাসা ‘প্যাশন’-এ বদলে গেল। সেটাই জ্যোতিষ্ককে টেনে নিয়ে গেল স্বপ্নপূরণের পথে। এই যাত্রাপথে উগান্ডা থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন তিনি। সেখানে জ্যোতিষ্ক কে বলতে শোনা যায়, ”বিভূতিবাবু, আমি রয়েছি আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য।” কথা রেখেছেন জ্যোতিষ্ক। পৌঁছেছেন সাহিত্যিকের কল্পিত সেই ‘চাঁদের পাহাড়’, রোয়েনজোরি পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মার্গারিটা পিকে। এর উচ্চতা ৫,১০৯ মিটার বা ১৬,৭৬৩ ফুট। এটি আফ্রিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। বাস্তবে কোনও বাঙালির এই প্রথম ‘চাঁদের পাহাড়’ জয়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ