ছবি রয়টার্স
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষণিকের মিলন। অথচ যা রেশ রেখে যায় চিরকাল। ছোটগল্পের মতো। শেষ হয়েও যার শেষ নেই। রোলাঁ গারোয় জন্ম হল তেমনই এক সার্থক ‘ছোটগল্পে’র। রাফায়েল নাদালের ফেয়ারওয়েলে হাজির হয়েছিলেন রজার ফেডেরার, নোভাক জোকোভিচ এবং অ্যান্ডি মারে। অর্থাৎ বলাই যায়, রোলাঁ গারোয় ‘বিগ ফোরে’র মিলন দেখল টেনিস দুনিয়া।
রবিবার দুপুরের মধ্যেই রোলাঁ গারোয় পৌঁছে যান ক্লে কোর্টের সম্রাট। ঠিক ছিল, এখানেই তাঁকে বিশেষ বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ১৪ বারের ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়নকে দেখে উপস্থিত দর্শকরা ‘রাফা… রাফা’ স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁর অটোগ্রাফ নিতে ছুটে আসেন অসংখ্য দর্শক। পরে তাঁকে দেখা যায় আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে।
প্যারিসের কোর্টে নাদালের নামের পাশে ১১২টি জয়। হেরেছেন মাত্র চার ম্যাচ। তাঁকে ‘ক্লে কোর্টের সম্রাট’ বলা হয় এই কারণেই। গত বছরের নভেম্বরে কিংবদন্তি নাদাল তাঁর টেনিস কেরিয়ারের ইতি টানেন। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে অবসর নেন তিনি। আলেকজান্ডার জাভেরেভের কাছে প্রথম রাউন্ডে হেরে যাওয়ার এক বছর পর তিনি এই প্রতিযোগিতার সরকারি টিজারের ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে ফিরে আসেন। এখানেই তাঁকে ফেয়ারওয়েল জানানো হয়।
The King’s Speech.
— Roland-Garros (@rolandgarros)
গোটা টিয়ার থেকে অভিবাদন কুড়োতে দেখা যায় রাফাকে। ১০ হাজার মানুষ ক্লে কোর্টের রঙে টি-শার্ট পরে এসেছিলেন। তাঁদের করতালিতে স্ট্যান্ডগুলি যেন জীবন্ত ক্যানভাস। অসংখ্য সমর্থকের গায়ে ছিল ‘Merci RAFA’ (ধন্যবাদ রাফা) লেখা টি-শার্টও। স্তম্ভিত হয়ে নাদাল যেন ‘রূপকথা’কেই পরখ করছেন। স্ট্যান্ডে এক মহিলাকে দেখা যায় তাঁর সঙ্গীর চোখের জল মুছে দিতে। কাছাকাছিই দর্শকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টেনিস তারকা কার্লোস আলকারাজ এবং ইগা সোয়াটেক। দু’জনেরই পরনে ‘ফেয়ারওয়েল টি-শার্ট’। স্ক্রিনে নাদালের ফ্রেঞ্চ ওপেনের এতদিনের জার্নির একটা তিন মিনিটের ভিডিও চালানো হয়। যা দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি নাদাল। এরপর যেন ‘কান্না ব্যথিবে আকাশ’। নাদালের চোখের জল জানান দেয়, আসলে তা টেনিসের প্রতি সমর্পণের।
এরপর একে একে কোর্টে প্রবেশ করেন ফেডেরার, জোকোভিচ, মারে। তাঁদের দেখে এগিয়ে যান নাদাল। একে একে তাঁদের জড়িয়ে ধরেন। এভাবেই যেন ‘বিগ ফোর’ মিলে যান টেনিসের মহামঞ্চে। নাদাল বলেন, “মের্সি বেয়াউকোপ (অনেক ধন্যবাদ)… গত ২০ বছর ধরে এই কোর্টে খেলার পর এখন আমি কীভাবে শুরু করব বুঝতে পারছি না। এই কোর্ট আমার হাসি-কান্না-হারজিতের সাথী। এখানে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ।” তাছাড়াও বিদায়ী অনুষ্ঠানের জন্য তিনি ফরাসি টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি গিলেস মোরেতোঁ এবং টুর্নামেন্টের ডিরেক্টর অ্যামিল মরেশমোকেও ধন্যবাদ জানান। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে প্রথমবার ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নাদাল। তারপর তাঁর হাতযশে র্যাকেট হয়ে উঠেছে জাদুকাঠির মতো। যাতে সম্মোহিত থেকেছে টেনিস বিশ্ব।
Can you feel it coming? 🥹
— Roland-Garros (@rolandgarros)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.