Advertisement
Advertisement
Sujata Kujur

ধার করা স্টিকে খেলে জাতীয় দলে সুযোগ, বঙ্গ হকির নয়া মুখ সুজাতা

বাংলার হয়ে জাতীয় স্তরে প্রতিনিধিত্ব করলেও সুজাতা আদতে ওড়িশার বাসিন্দা।

Sujata Kujur upcoming hockey player had to face poverty in her early days
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 5, 2025 4:19 pm
  • Updated:April 5, 2025 5:19 pm   

শিলাজিৎ সরকার: বঙ্গ হকির ভাণ্ডারে ‘রতন’ একেবারে কম নেই। লেসলি ক্লডিয়াস, গুরবক্স সিং, বীরবাহাদুর ছেত্রীর মতো অলিম্পিক গেমসে লন্ডন অলিম্পিকে অধিনায়ক ভরত ছেত্রী। তবে তার পুরোটাই পুরুষ দলের ক্ষেত্রে। শেষ কবে জাতীয় মহিলা দলে বাংলার কোনও প্রতিনিধি ছিলেন? আদৌ কি ছিলেন? সে কথা মনে করতে পারেন না হকি বেঙ্গলের কর্তাব্যক্তিরাও।

Advertisement

তবে আর কয়েকদিনের মধ্যে বদলে যেতে চলেছে ছবিটা। কারণ এবার বাংলার এক প্রতিনিধিকে দেখা যাবে জাতীয় মহিলা হকি দলে। তিনি সুজাতা কুজুর। গত মাসেই প্রথমবার সিনিয়র দলে ডাক পেয়েছেন চিলিতে জুনিয়র বিশ্বকাপ খেলা এই মিডফিল্ডার। প্রথমবারেই চলে এসেছেন ৪০ জনের কোর গ্রুপে। এবার জাতীয় দলেও ঢুকে পড়তে চলেছেন সুজাতা। এ মাসেই ৫ টেস্টের সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে ভারত। ২০ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত হতে চলা সিরিজের ২৬ জনের দলে রয়েছেন সুজাতাও। দল ঘোষণা না হলেও কোচ হরেন্দ্র সিং ইতিমধ্যেই সফরের স্কোয়াডে থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন বছর বাইশের সুজাতাকে।

যে কথা স্বীকার করে বেঙ্গালুরুর জাতীয় শিবির থেকে ফোনে তিনি বলছিলেন, “কোচ বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছি। দেশের হয়ে খেলাটা সবসময়ই স্বপ্ন ছিল। তা পুরণ হতে চলেছে। তবে এটা সবে শুরু। সিনিয়র দলের হয়ে ধারাবাহিকভাবে খেলতে চাই।” একইসঙ্গে এখন থেকেই অলিম্পিকের ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন তিনি। বলছিলেন, “তিন বছর আছে আর। তার আগেই নিজেকে পুরোপুরি তৈরি করে ফেলাই এখন আমার পরিকল্পনা।”

বাংলার হয়ে জাতীয় স্তরে প্রতিনিধিত্ব করলেও সুজাতা আদতে ওড়িশার বাসিন্দা। রাজ্যের হকি-হাব বলে পরিচিত সুন্দরগড়ের এক গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন তিনি। তবে ছোট্ট সুজাতার হকি খেলাটা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। নিজেদের গ্রামে খেলার মতো জায়গাও ছিল না। প্রতিদিন সাইকেলে পাশের গ্রামে যেতেন তিনি। কৃষক বাবার পক্ষে পাঁচ জনের সংসার চালানোটাই ছিল চ্যালেঞ্জ। সেখানে মেয়েকে হকি স্টিক কিনে দেওয়াটাই বিলাসিতা। হার মানেননি সুজাতাও। বলছিলেন, “আমি যখন শুরু করি, সুন্দরগড়ে হকি তখনও বিশেষ জনপ্রিয় হয়নি। আমাকে স্টিক কিনে দেওয়ার মতো টাকা বাবার কাছে ছিল না। তাই সিনিয়র দাদাদের দেওয়া স্টিক নিয়ে খেলতাম। আমি জুনিয়র বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়ার পর ওই দাদারা খুব খুশি হয়েছিল।” ২০১৭ সালে সুন্দরগড় সাইয়ে সুযোগ পান সুজাতা। তার তিন বছর পর আরও উন্নত পরিকাঠামো দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতা সাইয়ে। এরপর থেকে বাংলার হয়েই জাতীয়স্তরে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সুজাতা।

সুজাতার জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবরে বঙ্গ হকিতেও খুশির হাওয়া। হকি বেঙ্গলের সচিব ইস্তিয়াক আলি বলছিলেন, “সুজাতার জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা আনন্দের খবর। গত কয়েক বছরে আমাদের মেয়েরা ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করছে। হরিয়ানা, ওড়িশার মতো দলকে হারাচ্ছে। এখন অ্যাস্ট্রোটার্ফ হয়ে যাওয়ায় আরও প্লেয়ার উঠে আসবে। আগামী কয়েক বছরে জাতীয় দলে বাংলার প্রতিনিধি বাড়বে।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ