সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতের ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় নাগরিকের। ওই ঘটনার পর ভারতীয় সেনা অপারেশেন সিঁদুর চালালেও, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলেও খোঁজ মিলছিল না পহেলগাঁওকাণ্ডের জঙ্গিদের। এই অবস্থায় কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম প্রশ্ন তোলেন, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সত্যতা এবং পাক যোগ নিয়ে। যদিও মঙ্গলবার লোকসভার ভাষণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন, সোমবার শ্রীনগরে ‘অপারেশন মহাদেবে’ পহেলগাঁও হামলার ৩ জঙ্গিই খতম হয়েছে। জঙ্গিদের পরিচয়ের প্রমাণ দিয়ে বিরোধী কটাক্ষের উত্তরে শাহ জানান, নিহত লস্কর জঙ্গিদের দেহের সঙ্গে মিলেছে পাকিস্তানি ভোটার কার্ড, উদ্ধার হয়েছে পহেলগাঁওয়ে পর্যটক-হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র।
সোমবার শ্রীনগরের দাচিগাম জঙ্গলে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তিন জঙ্গির। এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন মহাদেব’। এদিন অমিত শাহ জানান, গতকাল পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদী হামলায় তিন জঙ্গিই সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, “এই সন্ত্রাসবাদীরা পহেলগাঁওয়ের হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘অপারেশন মহাদেবে’ আমাদের সেনাবাহিনী তাদের নিকেশ করেছে।” হত তিন জঙ্গির নামও জানান শাহ। বলেন, “এই তিন জঙ্গির নাম সুলেমান, আফগান এবং জিবরান।” এই তিন জনকে খাবার জুগিয়ে সাহায্য করেছিল যে ব্যক্তি তাকে আগেই আটক করা হয়েছিল। সেই নিহত জঙ্গিদের দেহ শনাক্ত করেছে।
অপারেশন সিঁদুরের পরেও পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত জঙ্গিদের খোঁজ না মেলায় বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়ে বিজেপি সরকার। সোমবার ৩ জঙ্গি নিকেশের পরেও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা চিদাম্বরম প্রশ্ন তোলেন, এরাই কি পহেলগাঁও হামলার তিন জঙ্গি? এরা যে পাকিস্তানি জঙ্গি তার প্রমাণ কী? এই বিরোধী কটাক্ষের জবাবে সংসদে শাহ বলেন, “আমি ভেবেছিলাম তাঁরা পহেলগাঁওকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুর খবর পেয়ে খুশি হবেন। কিন্তু দেখলাম তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খুশি নন। বরং হতাশ হয়েছেন।” এইসঙ্গে জঙ্গিদের পাক যোগের প্রমাণ দেন শাহ। তিনি জানান, জঙ্গিদের থেকে পহেলগাঁও হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পাকিস্তানি ভোটার কার্ড মিলেছে, তাদের কাছে মিলেছে পাকিস্তানি চকলেটও। এছাড়াও হত তিন জঙ্গিই যে পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হয়।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতের ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় নাগরিকের। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, নৃশংস এই হামলার পর গত তিন মাস ধরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল জঙ্গিরা। তবে সম্প্রতি জঙ্গিদের কাছে থাকা টি৮২ আল্ট্রাসেট কমিউনিকেশন ডিভাইস চালু করে জঙ্গি মুসা। এটি এক ধরনে স্যাটেলাইট ফোন যা পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানোর সময় ব্যবহার করে জঙ্গিরা। সেই ফোন ফের চালু হতেই সেনাবাহিনী জঙ্গিদের লোকেশন জেনে যায়। শুরু হয়ে যায় অপারেশন মহাদেবের প্রস্তুতি। গত কয়েকদিন ধরে জঙ্গিদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল সেনাবাহিনী। অপেক্ষা করা হচ্ছিল এমন জায়গায় জঙ্গিরা যাক, যেখানে জঙ্গিদের ঘিরে ফেলে নিকেশ করা হবে। পালানোর কোনও পথ থাকবে না। সেই অপারেশন গতকাল চালানো হয়। যা সফল হয়েছে বলেই দাবি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.