ছবিতে ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গা।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির betvisa888.com৷ আজ রইল পূর্বস্থলীর ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: দেবী নয়, দুর্গাকে দেখা হয় বাড়ির বধূ হিসাবে। তাই দশ হাত থাকলেও দু’টি ছাড়া বাকিগুলি চোখের আড়ালেই থাকে! ৫০০ বছর ধরে পূর্বস্থলী এলাকার পাটুলির ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোর এটাই বিশেষত্ব। ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো নিয়ে লোকমুখে নানা কাহিনী প্রচলিত। পরিবারের সদস্যদের মতে, স্বয়ং দেবী দুর্গাই এই পরিবারের গৃহবধূ হিসাবে এসেছিলেন।
ভাগীরথীর তীরে অট্টালিকা বানিয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন এই পরিবারের সদস্যরা। একসময় পরিবারে এক পুত্রের বিয়ে দেওয়া হয়। দিব্যি সংসার চলছিল। রীতি অনুযায়ী পরিবারের পুরুষদের সামনে মাথায় ঘোমটা টেনে রাখতেন বাড়ির বধূরা। একদিন বড়ির এক বউ হাতে খাবারের থালা নিয়ে এক ভাসুরের সামনে চলে আসেন। সেইসময় ঘোমটা দিতে ভুলে গিয়েছিলেন সেই বধূ। ভাসুরের চোখে চোখ পড়তেই ঘটে যায় অলৌকিক কাণ্ড। বউমার হাতের পিছন থেকে বেরিয়ে আসে আরও বেশ কয়েকটি হাত! সেই হাত দিয়ে ঘোমটা টানেন ওই বধূ। ভাসুর স্বচক্ষে সেই দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
গোটা বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। তারপরই একদিন ওই ভাসুরের স্বপ্নে এসে স্বয়ং দেবী দুর্গা বলেন, “আমিই তোদের বাড়িতে বউ হয়ে ছিলাম।” তারপর থেকেই ওই বাড়িতে দুর্গাপুজোর শুরু। তাই এই পুজোর প্রতিমার দু’টি ছাড়া বাকি আটটি হাত প্রায় ঢেকেই রাখা হয়। ভট্টাচার্য বাড়ির বর্তমান বংশধর সুজিত ভট্টাচার্য জানান, তাঁরা নিজেরাই এই পুজো করেন। বাইরে থেকে কোনও ব্রাহ্মণ আসেন না এখানে। মায়ের প্রতিমার সঙ্গে সিংহের পরিবর্তে থাকে ঘোড়া। দু’টি হাতের একটিতে থাকে ত্রিশূল ও অপর হাতে সাপ। রীতি মেনে এখন পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.