সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার যুদ্ধের ইঞ্জিনে তেল যুগিয়ে চলেছে ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে ব্যর্থ হয়ে এমনই অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। এবার সেই ইস্যুতেই কড়া হুমকি দেওয়া হল ন্যাটোর তরফে। ভারতের নাম নিয়েই ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট জানিয়ে দিলেন, ভারত, চিন, ব্রাজিল-সহ অন্যান্য দেশগুলি যদি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যায় সেক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে এদের উপর।
এই ইস্যুতে তিন দেশের নাম করে রুট বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী, চিনের প্রেসিডেন্ট ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, আপনারা যদি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যান, ওদের থেকে তেল ও গ্যাস কেনেন সেক্ষেত্রে আপনাদের উপর ১০০ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। আপনারা জানেন মস্কোর ওই ব্যক্তি (ভ্লাদিমির পুতিন) কোনও রকম শান্তি আলোচনাকে গুরুত্ব সরকারে নেন না।” একইসঙ্গে এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, পুতিনকে শান্তি আলোচনায় বসার জন্য তার উপর চাপ বাড়ান। রুট বলেন, “দয়া করে ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করুন এবং তাঁকে বলুন যে তাঁকে শান্তি আলোচনার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। অন্যথায় এই নিষেধাজ্ঞা ব্রাজিল, ভারত এবং চিনের উপর ব্যাপকভাবে আঘাত হানবে।”
বর্তমানে নিজ দেশের চাহিদা মেটাতে রাশিয়ার ৭০ শতাংশ জ্বালানি তেল কেনে ভারত ও চিন। এই জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বড় গ্রাহক ব্রাজিল-সহ আরও একাধিক দেশ। আমেরিকা মনে করছেন, ভারত ও চিনের এই জ্বালানি তেল কেনা রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের ‘ব্যাক বোন’ হিসেবে কাজ করছে। ফলে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে গেলে এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা জরুরি। এ প্রসঙ্গে রিপাকলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ও রিচার্ড ব্লু মেন্থাল মার্কিন সংসদে এক বিলও পেশ করেছেন। যেখানে দাবি করা হয়েছে, যে দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করছে তাদের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হোক। ইতিমধ্যেই ৮৪ শতাংশ সমর্থন পাওয়া গিয়েছে বিলটির পক্ষে।
এদিকে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামানো নিয়ে রাশিয়াকে অনেকদিন ধরে বলা হচ্ছে। আগামী ৫০ দিনের মধ্যে পুতিন যদি সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি না হয়, তাহলে রাশিয়ার উপর আরও চড়া হারে শুল্ক আরোপ করবে আমেরিকা।” এই শুল্কের পরিমাণ ১০০ শতাংশ হবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের সেই বার্তা স্মরণ করিয়েই ভারত-সহ বাকি দেশগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুঁশিয়ারি দিলেন ন্যাটো প্রধান।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পরই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’একবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা হলেও এ বিষয়ে খুব একটা সাফল্য মেলেনি আমেরিকার। নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে এই যুদ্ধ থামানোই ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই যে কোনওভাবে ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতেই কোমর বেঁধে নেমেছে আমেরিকা। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে রাশিয়া ও তাদের সঙ্গে বাণিজ্যকারী দেশগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করতেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.