সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জুন মাস থেকে গড়ে ১১ মিনিট খোলা ছিল গাজার ত্রাণ শিবির। এইটুকু সময়ের মধ্যেই খাবার সংগ্রহ করতে হবে। বেচাল দেখলেন চলছে গুলি। এই সময়ের মধ্যে খাবার নিতে স্বাভাবিকভাবেই হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে ত্রাণ শিবিরে। ঘটছে পদপিষ্টের মতো ঘটনা। এর সঙ্গে ছুটছে বুলেট। সব মিলিয়ে গাজার ত্রাণ শিবির হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ। যার জেরে অনাহারে, অপুষ্টিতে শিশুমৃত্যু লাগাতার বেড়েছে চলেছে। রিপোর্ট বলছে, গত ৩ দিনে গাজায় অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ২১ শিশুর।
রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে, গত মে মাস থেকে এখনও পর্যন্ত গাজার ত্রাণ শিবিরগুলিতে খাবার আনতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে হাজারের বেশি মানুষের। দেশতির খাদ্যসংকট চরম সীমায় পৌঁছেছে। ২০ লক্ষের বেশি মানুষ খাদ্য ও জীবনধারণের নুন্যতম রশদ পাচ্ছেন না। একমাত্র উপায় ত্রাণ শিবির। সেখানেও ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভুখা পেটে গুলি ছুড়ছে ইজরায়েলের সেনা। এই পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার গাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে গাজা মৃত্যু এবং ধ্বংসের এমন এক স্তরে রয়েছে, যার তুলনা নেই।”
এদিকে গাজার এক হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, গত তিন দিনে অপুষ্টি এবং অনাহারে সেখানে ২১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে! গাজার আল-শিফা মেডিক্যাল সেন্টারের ডিরেক্টর মহম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলিতে প্রতি দিনই অপুষ্টি এবং অনাহারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সংখ্যা যথেষ্ট ‘উদ্বেগজনক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন সালমিয়া। অভিযোগ উঠছে, দিনের পর দিন ত্রাণ শিবিরে গিয়ে খাবার পাচ্ছেন না মানুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগের দিন থেকে সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন খাবারের জন্য। তারপরও খাবার পাচ্ছেন না। সামান্য খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ত্রাণশিবিরে ভিড় করছেন গাজাবাসী।
গাজায় ত্রাণ বিতরণ করছে ইজরায়েল-সমর্থিত সংগঠন গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। তাদের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই সংস্থা চার জায়গায় ত্রাণ দিচ্ছে। যেখানে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে সেই এলাকায় প্যালেস্টানিয়দের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এখান থেকে ত্রাণ শিবিরের দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার। সেখান থেকেই ত্রাণ নিতে আসতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। তারপর এখানে এসেও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। এদিকে গত মার্চ থেকে গাজা উরধ করে রেখেছে ইজরায়েলের সেনা। ফলে অন্য কোনও বেসরকারি ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এলাকায়। সম্প্রতি প্রবল চাপের মুখে অবরোধ কিছুটা শিথিল করা হলেও তাতে খাদ্য সংকট কাটছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.