সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তস্নাত মায়ানমার (Myanmar) নিয়ে সারা বিশ্বের উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। শনিবার একদিনে অন্তত ১১৪ জনের মৃত্যুর পরে একযোগে বারোটি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তরফে যৌথ বিবৃতি দিয়ে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে জুন্টার (Junta) নিষ্ঠুরতার। গত দু’মাস ধরেই গণতন্ত্রকামীদের থামাতে নির্বিচারে তাদের উপরে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সংখ্যার বিচারে সবচেয়ে নারকীয় হত্যালীলা চলেছে শনিবার।
মায়ানমারের সেনা আগেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল, যদি গণতন্ত্রকামীরা ফের পথে নামে তাহলে সরাসরি মাথায় গুলি করবে তারা। উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত প্রতিবাদীদের মাথা লক্ষ্য করেই গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে মায়ানমার সেনাকে। কিন্তু এই প্রথম সরাসরি এমন হুমকি দিয়েছিল তারা। সেদেশের সরকারি টিভি চ্যানেলেই এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। পরে রাজপথে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হলে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে সেনা। দেশের ৪৪টি শহরে সেনার গুলিতে লুটিয়ে পড়তে থাকেন প্রতিবাদীরা। তাদের মধ্যে বহু নাবালক-নাবালিকারাও ছিল। রীতিমতো লোকবসতির মধ্যে ঢুকে গুলি চালানোর কথা জানা গিয়েছে। এক তেরো বছরের কিশোরীকে তার বাড়ির মধ্যেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই সেনার গুলিতে মৃতের সংখ্যা চারশো ছাড়িয়ে গিয়েছে।
ঘটনার নিষ্ঠুরতায় বিস্মিত গোটা বিশ্ব। আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া-সহ বারোটি দেশের তরফে পেশ করা বিবৃতিতে জুন্টার এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছে, ”যে কোনও পেশাদার সেনাবাহিনী সব সময় আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজ করে। মানুষকে রক্ষা করাই তাদের কাজ। ক্ষতি করা নয়। আমরা মায়ানমারের সেনার কাছে আরজি জানাচ্ছি হিংসা থেকে বিরত হয়ে মায়ানমারের মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করার।”
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.