সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা নার্স। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন তিনি। ছোট্ট মেয়ের দেখভালের সময়ও পাচ্ছেন না। হাসপাতালের চার দেওয়ালেই দিন কাটছে তাঁর। কিন্তু একরত্তি বোঝে না করোনার ভয়াবহতা। তাই তো মাকে ছাড়া এক সেকেন্ডও কাটছে না তার। দূর থেকে হাসপাতালে মাকে দেখে আসা ছাড়া, আর কোনও উপায় নেই শিশুর। সংক্রমণের আশঙ্কাই তাই দূর থেকে মেয়েকে আলিঙ্গন করছেন মা। আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিওই এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। মা-মেয়ের দূরত্ব চোখে জল এনেছে নেটিজেনদের।
করোনা আতঙ্কে কাঁপছে চিন। সংস্পর্শেও মারণ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা প্রবল। তা সত্ত্বেও দায়িত্ব থেকে পিছু হটার কথা ভাবতেও পারেননা চিনের এক মহিলা নার্স। কারণ, চাকরি জীবনের শুরু থেকেই যে তাঁর ব্রত অসুস্থকে সুস্থ করে তোলা। তাই আতঙ্ককে দূরে সরিয়ে করোনা আক্রান্তের সেবায় ব্রতী তিনি। দিনরাতের অধিকাংশ সময় যে কীভাবে কেটে যাচ্ছে, তা বুঝতেই পারছেন না। নাওয়া-খাওয়াও প্রায় ভুলতে বসেছেন। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের সঙ্গেও দূরত্ব বেড়েছে তাঁর। করোনা যদি মেয়ের শরীরে বাসা বাঁধে, এই আতঙ্কে সন্তানের কাছে যাচ্ছেন না। হাজারও ব্যস্ততার মাঝে মেয়েকে কাছে না টেনে থাকতে পারতেন না যে মা, সেই আজ হাসপাতালের চার দেওয়ালে বন্দি।
এদিকে, মাকে কাছে না পেয়ে দুঃখে দিন কাটছে খুদের। করোনা ভয়াবহতা সম্পর্কে এখনও বোধ তৈরি হয়নি শিশুর। তাই মাকে কাছে না পেয়ে থাকতে পারছে না সে। কয়েক মিনিটের জন্য দূর থেকে মাকে দেখেই দিন কাটছে। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় রোজ কিছু না কিছু হাতে করে নিয়েও যায় সে। কোনওদিন পুডিং কিংবা কোনওদিন চকলেট সঙ্গে থাকেই। মেয়ে চলে যাওয়ার পর তার দেওয়া চকলেট বা পুডিং সস্নেহে তুলে নেন নার্স।
সম্প্রতি মা-মেয়ের দেখা হওয়ার আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, অবুঝ সন্তান তার মাকে প্রশ্ন করছে কবে আবার সব আগের মতো হবে? মা জবাবে জানান, “তোমার মা দৈত্যদের সঙ্গে লড়াই করছে। তারা মারা গেলেই আবারও মা ফিরে আসবে। যুদ্ধ জয় করেই তোমার কাছে ফিরে যাবো।” একথা বলার পরই অঝোরে কাঁদছেন মা-মেয়ে। দূর থেকে আলিঙ্গনের ভঙ্গিমায় হাত বাড়ান মা। মেয়েও তাঁকে দেখে তাই করে। এরপর পুডিং রেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায় মেয়ে। চোখের জল মুছতে মুছতে খাবারের কৌটো হাতে তুলে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যান মহিলা।
দূর থেকে আলিঙ্গনের মুহূর্ত মন কেড়েছে নেটিজেনদের। তাঁদের একটাই প্রার্থনা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করোনা ভাইরাস দমন হোক। দূরত্ব ঘুচুক মা-মেয়ের।
This is so painful. May God help Chinese win this monster. Kudos to the nurse
— John Ohagah (@JojohnJohn1)
This kid has broken my heart..God be merciful to those suffering…prayers 🙏🙏🙏
— Beautiful World (@Beautif98478301)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.