তুরস্কে চলছে আন্দোলন।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আতাতুর্কের উদারপন্থী তুরস্ক এরদোগান জমানায় মৌলবাদের দখলে। ধর্মীয় কড়াকড়ির জেরে পান থেকে চুন খসলেই রে রে করে তেড়ে উঠছে ধর্মোন্মাদের দল। এহেন মৌলবাদীদের কবলে এবার তুরস্কের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘লেমন’। তাদের প্রকাশিত একটি কার্টুনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল তুরস্কের ইস্তানবুল। অভিযোগ, ওই কার্টুনে ইহুদি ও মুসলিম ধর্মের দুই পয়গম্বর মুসা ও মহম্মদের ছবি আঁকা হয়েছে। তীব্র জনরোষের জেরে এই ঘটনায় পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, গত ২৬ জুন লেমন পত্রিকায় একটি কার্টুন প্রকাশ করা হয়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আকাশে দুই ব্যক্তি একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করছেন তাঁদের পিঠে রয়েছে অ্যাঞ্জেলের মতো ডানা, মাথায় উজ্জ্বল বলয়। পায়ের নিচে জ্বলছে আস্ত শহর। আছড়ে পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র। এদের একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে মহম্মদ ও অন্যজন মুসা। এই কার্টুন সামনে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন একদল মানুষ। জানা যায়, গাজার মাটিতে ইজরায়েলের নৃশংসতা দেখাতে প্রকাশ করা হয়েছে কার্টুনটি। যেখানে পয়গম্বরের ছবি প্রকাশ করার ঘটনাকে মুসলিমদের ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়েছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। পত্রিকার অফিসের সামনে ভিড় জমান একদল মানুষ। রীতিমতো ভাঙচুর চালানো হয় অফিসে।
যদিও পত্রিকার সম্পাদক টুনকে আকগুন ফোনে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, “একজন মুসলিম ব্যক্তিকে তুলে ধরতেই কাল্পনিকভাবে ওই নাম ব্যবহার করা হয়েছে। গোটা বিশ্বে অন্তত ২০ কোটি মানুষ রয়েছেন যাদের নামে মহম্মদ রয়েছে। এই কার্টুনের সঙ্গে পয়গম্বর মহম্মদের কোনও সম্পর্ক নেই।” যদিও সম্পাদকের ব্যাখ্যা কানে তুলতে নারাজ তুরস্ক সরকার। দেশের রক্ষণশীল গোষ্ঠীকে তুষ্ট করতে কোমর বেঁধে নামে সেখানকার সরকার। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত চার জনকে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া এক্স হ্যান্ডেলে এই গ্রেপ্তারির একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে কার্টুনিস্ট দোহান পেহলিভানকে মেঝের উপরে চেপে ধরে হাতকড়া পরাচ্ছে পুলিশ। এই কার্টুনকে ঘৃণ্য ও নবি মহম্মদকে অপমান বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘যারা মহম্মদের অপমান করে দেশে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছে তাঁদের কাউকে রেহাত করব না।’ ‘মহম্মদের’ কার্টুনকে কেন্দ্র করে হিংস্রতা অবশ্য পৃথিবীতে প্রথমবার নয়, ২০১৫ সালে ফ্রান্সের চার্লি হেবদো পত্রিকাতে এমন এক কার্টুনকে কেন্দ্র করে চরম আকার নিয়েছিল হিংসা। যার জেরে পত্রিকার অফিসে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয় ১২ জনের। ২০১২ সালে পেঙ্গুইন পত্রিকার অফিসে আগুন লাগানো হয়। এবার সেই ছবিই দেখা গেল তুরস্কে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.