সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতকে রুখতে তৈরি হচ্ছে নতুন জোট! এমনটাই প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানের এক সংবাদপত্রের রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, চলতি মাসে চিনে গিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন চিনা উপবিদেশমন্ত্রী সুন ওয়েইডং, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত বিদেশসচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। সার্কের ‘প্রতিপক্ষ’ হিসাবে একটি জোট গড়ে তোলাই এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
করাচির সংবাদপত্র দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, গত ১৯ জুন বৈঠকে বসে তিনপক্ষ। বৈঠকের পরে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হাসান বলেন, এই বৈঠকের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে, নতুন করে কোনও জোট তৈরির আলোচনা হয়নি। এমনকি এই বৈঠক নিয়ে বিবৃতিও দিতে চায়নি বাংলাদেশ। যদিও বৈঠকের পর পাকিস্তানের তরফে আলাদা করে বিবৃতি জারি করা হয়েছে।
তিন দেশের এই জোট হলে তা ভারতের বড়সড় মাথাব্যথার কারণ হবে সেকথা বলাই বাহুল্য। নয়াদিল্লির দীর্ঘ অপছন্দের CPEC(চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর) এবার বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তার জেরে পূর্ব ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে চিনা ড্রাগন। সম্প্রতি চিন সফরে গিয়ে চিকেন নেক দখলের কথা বলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। ফলে চিন্তা বাড়বে শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে। শুধু তাই নয়, বঙ্গোপসাগরীয় এলাকাতেও নিজের প্রভাব বাড়াবে চিন। যদি বেজিং-ইসলামাবাদ-ঢাকা জোট হয়, তাহলে ভারতের তিনদিকে ‘শত্রুদের ত্রিভুজ’ গড়ে উঠবে। কার্যত শত্রুদের ঘেরাটোপে আটকে যাবে ভারত।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে আসলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ফের আস্ফালন করতে চাইছে চিন। মাসদুয়েক আগে আফগানিস্তানের সঙ্গেও বৈঠক করে সেদেশে CPEC সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন-পাকিস্তান। এবার বাংলাদেশকেও কাছে টানছে বেজিং। ফলে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে সমুদ্রপথের ‘দখল’ নেওয়া অনেক সহজ হবে তাদের পক্ষে। সেটা হলে সমস্যা বাড়বে আমেরিকারও। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে কোয়াডকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের পর থেকে সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয়। কিন্তু চিন-পাকিস্তান- বাংলাদেশের নয়া জোটে সার্কের আরও বেশ কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার মতো। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই সার্ককে ‘পঙ্গু’ করার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। বাধা দিয়েছে ভারতের সহযোগিতায়। এবার কি তিন দেশের যৌথ উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ায় একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে সার্ক?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.