সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে আমেরিকা ও চিনের সংঘাত এবার চরম আকার নিল। চিনের উপর শুল্কের খাঁড়া চালানোর পাশাপাশি এই লড়াইয়ে ভারতকে পাশে চাইল আমেরিকা। মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট জানালেন, বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজের উপর চিনা আধিপত্য শেষ করতে ভারত-সহ গোটা ইউরোপের সমর্থন চাই।
সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ”চিনের তরফে বিরল খনিজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিশ্ব অর্থনীতির উপর উপর বিরাট ধাক্কা। এই লড়াই চিন বনাম সমগ্র বিশ্বের। রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আগামী মাস থেকে কার্যকর করতে চলেছে ওরা। আমরা জানি না কেন এই পদক্ষেপ করছে ওরা। তবে এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি আমরা।” ট্রাম্পের সহকর্মী আরও জানান, আমেরিকা চিনকে কোনওভাবেই এই বিরল খনিজকে অস্ত্রে পরিণত করতে দেবে না। ওরা বিশ্বের সমস্ত সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর বন্দুক টেনে ধরেছে। আমেরিকা কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে তা জানতে চাওয়া হলে বেসেন্ট বলেন, ”চিনের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে পদক্ষেপ করার জন্য আমেরিকা ইতিমধ্যেই ভারত, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এই লড়াইকে সকলকে পাশে চাইছে আমেরিকা।”
উল্লেখ্য, বিরল খনিজ রপ্তানির উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চিন। ৯ অক্টোবর চিনের তরফে জারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ০.১ শতাংশের বেশি বিরল খনিজ পদার্থ রয়েছে এমন পণ্য রপ্তানি করতে গেলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। বিদেশী সামরিক ব্যবহারের জন্য বিরল খনিজ রপ্তানি করা যাবে না। নতুন কিছু খনিজও যুক্ত হয়েছে নিষেধাজ্ঞা তালিকায়। এতেই বিপাকে পড়েছে আমেরিকা। কারণ আধুনিক পৃথিবীর মূল চালিকাশক্তি হল বিরল খনিজ। প্রযুক্তি ক্ষেত্র এই খনিজ ছাড়া ভাবা যায় না। অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্রের ভুল ভিত্তি এই খনিজ। এদিকে বর্তমানে বিরল খনিজে বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেছে চিন। ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিরল খনিজ মজুত রয়েছে চিনে। ৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন, দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিলে রয়েছে ২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন, তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারতে ৬.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। তবে চিন বিশ্বের ৭০% বিরল খনিজ খনন এবং ৯০ শতাংশের বেশি প্রক্রিয়াকরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
এই অবস্থায় চিনকে শিক্ষা দিতে গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ১ নভেম্বর থেকে চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। সবমিলিয়ে শুল্ক চাপবে ১৩০ শতাংশ। ট্রাম্প বলেন, চিনের মনোভাব অত্যন্ত আক্রমণাত্মক আমেরিকা তার শিল্পকে রক্ষা করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে, কয়েক ঘন্টা পরে, তিনি সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আশা করি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট শি’র দিনটি খারাপ কেটেছে। আমরা চিনকে আঘাত করতে চাই না, আমরা তাকে সাহায্য করতে চাই।’ বেসেন্টও বলেন, ‘বেজিংয়ের এই পদক্ষেপ কোনওভাবে শক্তি প্রদর্শন নয়, অত্যন্ত দুর্বলতার লক্ষণ। সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিশীল রাখতে এবং উত্তেজনা কমাতে যা যা করা দরকার, আমেরিকা তা করবে।’ চিনের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়েই এবার ভারতকে পাশে চাইল আমেরিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.