সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১৭ জুন বারবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে একবার দীর্ঘ কথোপকথনের পর আর ফোন রিসিভ করেননি মোদি। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে বেশকিছু টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপ পড়েছে ভারতের উপর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ঘুরপথে ভারতকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। সেই ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর অবশেষে প্রকাশ্যে এল কেন সেদিন ট্রাম্পের ফোন ধরেননি মোদি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস গত ১৭ জুনের সেই ফোন কলের বিস্তারিত রিপোর্ট তুলে ধরেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, ওইদিন ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির কৃতিত্ব দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে মোদির কাছে তাঁর আর্জি ছিল, ভারত যেন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাঁর (ট্রাম্প) নাম প্রস্তাব করেন। নিউইয়র্ক টাইমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেদিন প্রায় ৩৫ মিনিট কথোপকথন হয়েছিল ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে। যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার সংঘর্ষ বিরতির প্রসঙ্গ তোলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেন, দুই দেশের সামরিক উত্তেজনা থামাতে পেরে তিনি গর্বিত। এরপরই জানান, পাকিস্তান তাঁকে (ট্রাম্প) নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব দিতে চলেছে। ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল, মোদি যাতে ওই একই প্রস্তাব তাঁর জন্য পেশ করে। ট্রাম্পের এহেন প্রস্তাবে রীতিমতো বিরক্ত হন ট্রাম্প। কড়া সুরে জানিয়ে দেন, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে ট্রাম্পের কোনও হাত নেই। এই সংঘর্ষবিরতি দুই দেশের সম্মতিতে হয়েছে।
সংঘর্ষবিরতির কৃতিত্ব নেওয়ার পথে দাঁড়ি টানা ও নোবেল পুরস্কারের প্রস্তাবে অসম্মতিতে মোদির উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ওই ফোনালাপের কয়েকদিন পরই প্রথমদফায় ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর রুশ তেলের অজুহাত দিয়ে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয় ভারতের উপর। সবমিলিয়ে শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে কোয়াড বৈঠক উপলক্ষে ভারত সফরে আসার কথা ছিল ট্রাম্পের। তবে সে পরিকল্পনায় পুরোপুরি দাঁড়ি টানা হয়েছে। ১৭ জুনের পর দুই রাষ্ট্রনেতার সম্পর্ক এতটাই তলানিতে নামে যে এরপর আর কোনও কথোপকথন হয়নি দুই রাষ্ট্র নেতার মধ্যে।
তবে ট্রাম্পের নোবেল পাওয়ার স্বপ্নকে নরেন্দ্র মোদি বিশেষ পাত্তা না দিলেও, এই প্রস্তাব লুফে নেয় পাকিস্তান। সংঘর্ষবিরতির পর পাকিস্তানের তরফে ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর তরফেও। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন সত্য হলে এটা স্পষ্ট যে এই দেশগুলি ট্রাম্পের মন পেতেই এই প্রস্তাব করেছে। তার সুফলও পেয়েছে পাকিস্তান। আমেরিকার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে তাদের বাণিজ্য চুক্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.