সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে ফের তীব্র বাক্যবিনিময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনাকে আংশিকভাবে ‘স্বাগত’ জানানোয় বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু নেতানিয়াহু সেটিকে গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দেন। তখনই রেগে গিয়ে ট্রাম্প নাকি সরাসরি ফোনে বলেন, “তুমি এতটা নেগেটিভ কেন? এটা একটা জয়, মেনে নাও।”
ঘটনাটি ঘটেছে ৩ অক্টোবরের ফোনালাপে। এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন নিউজ পোর্টাল ‘অ্যাক্সিয়স’। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় গাজার নিরস্ত্রীকরণ এবং ভবিষ্যতে হামাসকে শাসনের বাইরে রাখার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে শর্ত রাখা হয়েছে, যদি হামাস হিংসা পরিত্যাগ করে ও অস্ত্র সমর্পণ করে, তবে তাদের সদস্যরা গাজায় থাকতে পারবেন। অন্যদিকে, হামাস জানিয়েছে, তারা বন্দিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি, তবে তার বিনিময়ে চাই সম্পূর্ণ ইজরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং একটি ‘প্যালেস্তানিয় জাতীয় কাঠামো’-র অধীনে নতুন শাসনব্যবস্থা।
তবে নেতানিয়াহু ফোনে ট্রাম্পকে বলেন, “এতে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই, এর কোনও মানেই হয় না।” এর পরেই ট্রাম্প বিরক্ত হয়ে জবাব দেন, “তুমি সবসময় এত নেতিবাচক কেন? এটা একটা জয়, মেনে নাও।” পরে অ্যাক্সিয়স-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ওকে বলেছি, এটাই তোমার জয়ের সুযোগ। ওঁকে মেনে নিতে হবেই, কারণ আমার সঙ্গে থাকলে মেনে নিতেই হয়।” ফোনালাপের কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প একটি বিবৃতি জারি করে ইজরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান, এবং তিন ঘণ্টার মধ্যেই নেতানিয়াহু সেই নির্দেশ দেন বলেই খবর।
শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাসকে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে রবিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী সোমবার ভোর ৩.৩০)। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আলোচনার প্রথম ধাপ এই সপ্তাহেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আলোচকদের দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশও দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, রবিবার থেকেই মিশরের শার্ম এল শেখে শুরু হয়েছে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ শান্তি আলোচনা। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারও সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা।
গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তাতে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের হিসাবে ৬৭ হাজারেরও বেশি প্যালেস্তানীয় নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার শিশু। আহতের সংখ্যা দেড় লক্ষের কাছাকাছি। গাজার প্রায় সব বাসিন্দাই বাস্তুচ্যুত। ইজরায়েল অবশ্য গাজায় গণহত্যা বা মানবিক সহায়তা আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, হামাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ সম্পূর্ণ আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.