সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ২০২১ সালে আফগানিস্তান ছেড়েছিল মার্কিন সেনা। কিন্তু মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে ফের কাবুলের দখল চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নজরে রেখে আমেরিকার দাবি, আফগানিস্তানের বগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটি তাদের হাতে তুলে দিক তালিবান। ট্রাম্পের এই ‘অন্যায্য’ দাবির আগেই বিরোধিতা করেছিল পাকিস্তান, রাশিয়া, চিন-সহ একাধিক দেশ। এবার আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়াল নয়াদিল্লি। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, চলতি মাসেই ভারত সফরে আসছেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তার আগে কৌশলী পদক্ষেপ করল নয়াদিল্লি।
সম্প্রতি আফগানিস্তান ইস্যু নিয়ে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাস্কো ফরম্যাট কনসালটেশনের সপ্তম সভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তান, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, চিন, কিরগিস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান-সহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তান-সহ প্রতিবেশি দেশগুলিতে অন্য দেশের সেনা মোতায়েন কিংবা সামরিক অবকাঠানো গড়ে তোলার চেষ্টা মেনে নেব না। এর ফলে শান্তি বিঘ্নিত হয়। সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে এবং জঙ্গি কার্যকলাপ থেকে আফগানিস্তানের মাটিকে রক্ষা করতে কাবুলকে যথাযথ সাহায্য করতে হবে।’
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে চান আফগানিস্তানের বাগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটি ফেরত পেতে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, চিনের আধিপত্য রুখতে কূটনৈতিক দিক কূটনৈতিক দিক থেকে এই ঘাঁটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তালিবানকে বিনামূল্যে এই বিমানঘাঁটি বিলিয়ে এসেছি। আফগানিস্তানে ফেলে আসা প্রতিটি জিনিস আবার আমাদের বুঝে নেওয়া উচিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, এই বায়ুসেনা ঘাঁটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি এর রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩৬০০ মিটার। কার্গো বিমান থেকে সমস্ত বোমারু বিমান এখানে অবতরণ করতে পারে। পাশাপাশি, এমন জায়গায় অবস্থিত যেখান থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে চিন পরমাণু মিসাইল তৈরি করে। অর্থাৎ চিন-সহ পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে নজরে রাখতেই সামরিক দিক থেকে আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ঘাঁটি। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলে মার্কিন সেনা ঘাঁটি গাড়লে প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার উপরেও নজর রাখা সহজ হবে। তবে আমেরিকার হাতে গুরুত্বপূর্ণ এই সেনাঘাঁটি তুলে দিতে একেবারেই নারাজ তালিবান। এনিয়ে ট্রাম্পকে তোপও দাগে তারা। এই ঘটনার পরই আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ায় একাধিক দেশ।
উল্লেখ্য, আমেরিকা আফগানিস্তান ছাড়ার পর দ্বিতীয়বার কাবুলিওয়ালার দেশের শাসনভার হাতে নেয় তালিবান। ক্ষমতা দখলের ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এতদিনে শুধুমাত্র রাশিয়াই স্বীকৃতি দিয়েছে তালিবানকে। ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও তালিবানকে এখনও পর্যন্ত স্বীকৃতি দেয়নি নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে বাগরাম নিয়ে ভারতের তালিবানের পাশে দাঁড়ানো কূটনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার উপর আফগান বিদেশমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফরের কথা আগেই শোনা গিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁর এই সফরেই হয়তো তালিবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.