সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতায় আসার পরই চিনা উস্কানিতে ভারত বিরোধিতা শুরু করেছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। দেশছাড়া করেছিলেন ভারতীয় সেনাকে। তবে সময় বদলেছে। সেই সঙ্গে চিন প্রেমও ঘুচেছে মালদ্বীপের। অল্প দিনেই মুইজ্জু বুঝে গিয়েছেন চিনা-সঙ্গ সুবিধের নয়। পরিস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে ভারতের মান ভাঙাতে তৎপর হয়েছিলেন মুইজ্জু। এবার মালদ্বীপের মাটিতে মোদির পা পড়তেই তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। এহেন মালদ্বীপের অহঙ্কার ভাঙার পর ফের বড় দাদার মতো দেশটির পাশে দাঁড়াল ভারত। শুক্রবার মোদি-মুইজ্জু বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে মালদ্বীপকে সমস্তরকম সহযোগিতা করবে ভারত। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ারও ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার মালদ্বীপের মাটিতে পা রাখার পর মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত-মালদ্বীপের শিকড় আমাদের ইতিহাসের চেয়েও পুরনো। উভয় দেশ প্রতিবেশীর চেয়েও বেশি কিছু।” এরপরই দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, “অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। মালদ্বীপের অর্থনীতির উন্নতিতে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।” মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতির লক্ষ্যে ভারত সব রকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন মোদি। এমনকী মালদ্বীপের সেনার সাহায্যে ৭২টি সামরিক যান দেওয়ার ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী কথায়, “প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা দুই দেশের পারস্পরিক আস্থার প্রমাণ। মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভারত সর্বদা সাহায্য করবে।” এখানেই শেষ নয়, মালদ্বীপে বিপুল বিনিয়োগেরও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৫৬৫ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৪,৮৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করা।
মালদ্বীপ সফরে প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক মহলের দাবি, মালদ্বীপে থাবা বসাতে থাকা চিনকে সরাতে ভারতের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপের নেপথ্যে রয়েছে বহু অঙ্ক। দীর্ঘ দিন ধরে ভারত ঘনিষ্ঠ ছিল এই দেশ। তবে মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর বদলে যায় সব হিসেব নিকেশ। শুরু হয় ভারত বিরোধী হাওয়া। চিনের বিপুল ঋণের টোপ গিলে ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় মুইজ্জু সরকার। দেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করা হয়। এর পালটা মালদ্বীপ বয়কটে বিপাকে পড়ে সেখানকার অর্থনীতি। বিপদ বুঝে ভুল শুধরে ফের ভারতের কোলে ঘেঁষেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট। এই পরিস্থিতিতে ফের চৈনিক চাল ভেস্তে দিতে খারাপ অতীত পিছনে ফেলে ফের মালদ্বীপের ‘বটবৃক্ষ’ হয়ে উঠল ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.