Advertisement
Advertisement
Shangri-La

সহ্যসীমা পার, পরের আঘাত আরও ভয়ংকর, পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি সেনার

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার রেশ পৌঁছল সিঙ্গাপুরেও।

Indian and Pakistani generals traded warnings at Shangri-La
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:June 3, 2025 11:26 am
  • Updated:June 3, 2025 11:26 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে ভারতের প্রত্যাঘাত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে। যারে জেরে পাকিস্তানি সেনার হামলার চেষ্টা। মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণ, ড্রোন হামলা। পাল্টা ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাক বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ। চারদিনের উত্তেজনার পর অবশেষে সংঘর্ষবিরতি। কিন্তু অস্ত্রের ঝনঝনানি যেন শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। এবার শুরু হয়েছে কথার যুদ্ধ। এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার রেশ পৌঁছল সিঙ্গাপুরেও। সেখানেই বাগযুদ্ধে জড়ালেন দু’দেশের সেনাকর্তারা। ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের সহ্যের সীমার লাল দাগটি টেনে দিয়েছে। এর থেকে পাকিস্তান আগামী দিনে শিক্ষা নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। অন্যদিকে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তা জেনারেল শাহিদ সমশাদ মির্জা কাশ্মীর সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেছেন, এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না-হলে আগামী দিনে মধ্যস্থতার সময়ও আর পাওয়া যাবে না। তার আগেই বড় অঘটন ঘটে যেতে পারে।

সিঙ্গাপুরের সাংগ্রি-লা বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন বিভিন্ন দেশের সেনাকর্তারা। দু’দেশের বাগযুদ্ধে ‘গুলি’ ছুটল ‘আঞ্চলিক সংকট ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায়। সেখানেই ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তা জেনারেল শাহিদ সমশাদ মির্জা, উভয়ের ভাষণেই উঠে এসেছে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত এবং সেই সংক্রান্ত বিতর্ক। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই দু’দেশের সামরিক কর্তারা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একে অপরকে। অনিল চৌহান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন অবস্থানের উপর যখন জোর দেন, তার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের সেনাকর্তা আবার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় জোর দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, যে কোনও সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান প্রয়োজন। আর ভারত পাল্টা বার্তায় বুঝিয়ে দিয়েছে, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন ‘রেড লাইন’ হল অপারেশন সিঁদুর।” অর্থাৎ সহ্যের সীমার লাল রেখা টেনেছে অপারেশন সিঁদুর। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “আমরা প্রায় দু’দশক বা তারও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসের এই ছায়া যুদ্ধের (প্রক্সি ওয়ার) শিকার হয়েছি। এবং অনেক মানুষকে হারিয়েছি। আমরা এর অবসান চাই।” একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর বিতর্ক তুলতেই কি পহেলগাঁও হামলা, কার্যত এমন প্রশ্নও উঠল।

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর এই প্রথম দু’দেশের সামরিক কর্তা মুখোমুখি। ওই অনুষ্ঠানে ভৌগোলিক সীমানার নিরিখে ভারত-পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের কাছাকাছি বসতে দেওয়া হয়। আর সেখানেই জেনারেল চৌহান বলেন, “যুদ্ধবিরতির পরেও ভারত সতর্ক রয়েছে। সেনাবাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, পাকিস্তান যদি আবার কিছু করে তা হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। অপারেশন সিঁদুর সফলভাবে ভারতের শক্তি প্রদর্শন করেছে। এই অভিযান থেকে আমাদের প্রতিপক্ষ কিছু শিক্ষা নেবে, আশা রাখছি।” এটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, ভারত সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নীরব থাকবে না। পাল্টা জবাব দিয়েছেন পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তা জেনারেল মির্জা। সন্ত্রাসবাদের কারণে পাকিস্তানেও বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর পরই তিনি কাশ্মীর ইস্যু তুলে ধরেন। বলেন, “যে কোনও সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান প্রয়োজন। সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও বন্দোবস্ত করে তা ঠেকিয়ে রাখা যায় বা পিছিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু তা চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না। আগামী দিনে বিশ্বশক্তিগুলি হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতার সময় না-ও পেতে পারে। তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে। ক্ষয়ক্ষতি বা ধ্বংসলীলা তখন আর এড়ানো যাবে না।” তবে এদিন পাক-সেনাকর্তার একটি ইঙ্গিতপূর্ণ কথা থেকে নানা ব্যাখ্যা শুরু হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেছেন, “যখন কোনও সংকট থাকে না, তখন কাশ্মীর নিয়ে আলোচনাও হয় না।” তবে কি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হয়েছিল কাশ্মীর বিতর্ক উসকে দেওয়ার জন্যই, এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement