সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে অন্তবর্তী বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর হতে চলেছে। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে চূড়ান্ত পর্বের আলোচনা চলছে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে। কিন্তু চুক্তির বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষেরই আপত্তি রয়েছে এবং তারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে অনড়। যদিও আলোচনার মাধ্যমে সেগুলি দ্রুত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দুই দেশই।
এই সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল জিনগতভাবে পরিবর্তিত শষ্যের আমদানি বা রপ্তানি। আমেরিকা চায় এই সমস্ত শষ্যগুলির জন্য ভারত তার বাজার উন্মুক্ত করে দিক। কিন্তু ভারতের যুক্তি, এই ধরনের শষ্যের জন্য ভারত যদি তার বাজার একবার খুলে দেয়, তাহলে দেশের গোটা কৃষি পরিকাঠামো ভেঙে পড়বে। এর জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভারতের কৃষকরা। উল্লেখ্য, প্রযুক্তি মাধ্যমে যখন শস্যের জিনে পরিবর্তন আনা হয়, তখন সেই শস্যগুলিকে জিনগতভাবে পরিবর্তিত শস্য বা জিএম শস্য বলা হয়। এর ফলে খুব সময়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। জিএম শস্য ছাড়াও দু’দেশের মধ্যে আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। আমেরিকা ভারতীয় কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারে বৃহত্তরভাবে প্রবেশ করতে চায়। এর জন্য তারা চাপ দিচ্ছে নয়াদিল্লিকে। যদিও সূত্রের খবর, বাণিজ্যচুক্তি থেকে এই দুটি ক্ষেত্রকে বাদ রাখা হবে। অন্যদিকে, ভারত আবার জুতো, পোশাক এবং চার্মজাত পণ্যের উপর শুল্ক ছাড়ের দাবি জানাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। এখন দেখার আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত এবং আমেরিকা এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে পারে কি না।
গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ‘বিগ বিউটিফুল ইভেন্ট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, “আমাদের সঙ্গে সকলেই চুক্তি করতে চায়। মনে করে দেখুন। কয়েক মাস আগে এই সংবাদমাধ্যমই বলাবলি করছিল, আদৌ কি কোনও দেশ বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী? তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, গতকালই আমরা চিনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। আরও একটা বড়সড় একটা চুক্তি করতে চলেছি, সম্ভবত ভারতের সঙ্গে। বিরাট বড়মাপের চুক্তি হবে।”
সেই ঘোষণার আগে চারদিন ধরে বন্ধ দরজার আড়াল ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে লাগাতার আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা সফল হয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলেছিল ট্রাম্পের কথায়। উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউসের অধীশ্বর হওয়ার পরই বিশ্বব্যাপী শুল্কযুদ্ধের ঘোষণা করেন তিনি। সেই তালিকায় বাদ ছিল না ভারতও। ১০ শতাংশ বাধ্যতামূলক শুল্ক ছাড়াও ভারতীয় পণ্যে আরও ২৬ শতাংশ কর চাপিয়েছিলেন ট্রাম্প, তবে সেটি কার্যকরের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেন মার্কি প্রেসিডেন্ট নিজেই।
২৬ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিক আমেরিকা, এমনটাই চেয়েছিল ভারত। তবে সূত্রের খবর, দুপক্ষই বেশ কিছু পণ্যে কর কমাতে প্রস্তাব দিয়েছে। ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া বস্ত্র, গয়না, চর্মজাত জিনিস, প্লাস্টিক, কেমিক্যাল, চিংড়ি, তৈলবীজ, ফল ইত্যাদির উপর মার্কিন কর কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পালটা ইলেকট্রিক গাড়ি, মদ, ডেয়ারি পণ্যের মতো জিনিসে কর কমাতে বলেছে আমেরিকাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.