Advertisement
Advertisement
Islamic NATO

দুঃস্বপ্ন ইজরায়েল! ইউরোপের ধাঁচে মধ্যপ্রাচ্যে ‘মুসলিম ন্যাটো’ গঠনের প্রস্তাব ইরানের

'মুসলিম ন্যাটো' গঠিত হলে তার রাশ কার হাতে থাকবে?

Iranian officials call for creation of Islamic NATO ahead of OIC summit
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:September 15, 2025 6:42 pm
  • Updated:September 15, 2025 10:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে একা হাতে দাবিয়ে রেখেছে ‘ছোট্ট’ রাষ্ট্র ইজরায়েল। গত ৩ বছর ধরে হামাসের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ ছিটকে পড়ছে ইরান, ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া, কাতারের মতো রাষ্ট্রগুলিতে। এহেন পরিস্থিতিতে ইজরায়েলকে ‘শিক্ষা’ দিতে ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে জোটবদ্ধ করতে উঠেপড়ে লাগল ইরান। মুসলিম সহযোগী সংস্থা (OIC)-র বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে ইরানের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হল, ন্যাটোর মতো মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে ‘যৌথ সামরিক ফ্রন্ট’ গঠনের।

Advertisement

সোমবার কাতারে বসতে চলেছে ওআইসির শীর্ষ সম্মেলন। তার আগে সতর্কবার্তা দিলেন ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের প্রাক্তন কমান্ডর তথা এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য মোহসেন রেজাই। তিনি বলেন, ওআইসি যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হয় তবে ভবিষ্যতে সৌদি আরব, তুরস্ক এবং ইরাক ইজরায়েলের হামলার মুখে পড়বে। ইরানের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এর একমাত্র সমাধান হল মুসলিম দেশগুলিকে নিয়ে একটি সামরিক জোট গঠন করা।”

রেজাইয়ের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন ইরানের কোম প্রদেশের প্রধান শিয়া ধর্মগুরু জালাল রাজাভি মেহর। তিনি বলেন, “অবিলম্বে এই ধরনের সামরিক বাহিনী গঠন না করা হলে ভবিষ্যতে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির জন্য সমূহ বিপদ।” সামরিক বাহিনী কেমন হওয়া উচিত তার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “এক সেনাবাহিনী এমন হওয়া উচিত যেখানে একক কমান্ডের অধীনে পুরো বাহিনী কাজ করবে। প্রতিরক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজন শত্রুর উপর হামলা চালিয়ে তাকে নিশ্চিহ্ন করতেও দ্বিতীয়বার ভাবা হবে না।”

তবে প্রস্তাব উঠলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ইজরায়েল গঠন হওয়ার পর তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে মিশরের নেতৃত্বে দেশটির উপর হামলা চালায় সিরিয়া, জর্ডান, ইরাক ও লেবানন। তবে মাত্র ৬ দিনের যুদ্ধে পিছু হঠে মুসলিম দেশগুলি। ১৯৬৭ সালের এই যুদ্ধের পর নীলনদ দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। ধাপে ধাপে সহবস্থান ও শান্তির পথে হেঁটেছে ইহুদি রাষ্ট্র ও বাকি মুসলিম রাষ্ট্রগুলি। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর সব শান্তি প্রক্রিয়া বিসর্জন দিয়ে বেপরোয়া হামলার পথে হেঁটেছে ইজরায়েল। প্যালেস্টাইনকে কার্যত ধ্বংস করার পাশাপাশি ইজরায়েলের কোপে পড়েছে ইরান, ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া। সম্প্রতি মার্কিন সুনজরে থাকা কাতারেও হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির। এই পরিস্থিতিতে মুসলিম ন্যাটো গঠনের প্রস্তাব ‘সঙ্গত’ হলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলেও মুসলিম রাষ্ট্রগুলির একজোট হওয়া বেশ কঠিন। ধর্ম এক হলেও মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বিভেদ কম নেই। প্রথমত, শিয়া সুন্নি সমস্যায় জর্জরিত মুসলিম বিশ্ব। এই দুই সম্প্রদায়ের বিভাজন এতটাই যে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে নামতেও পিছুপা হয় না তারা। তাছাড়া মুসলিম ন্যাটো গঠিত হলে তার রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে সংঘাত কম হবে না। ইসলাম ধর্মের ধ্বজা কার হাতে রয়েছে তা নিয়েও গুরুতর সমস্যা রয়েছে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে। তাছাড়া, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্নেহধন্য আরব আমিরশাহি, কাতার, ওমান-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলি। ইরানের প্রস্তাব মেনে আমেরিকার বিরুদ্ধে গিয়ে এই জোট তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবে কতদূর এগোয় সেটাই দেখার।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement