সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় সময় রবিবার ভোরে ইরানের (Iran) তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। ইরানি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার ফের ইজরায়েলি সেনা হামলা চালিয়েছে ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রে। মনে করা হচ্ছে, ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্রটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতেই আমেরিকা ও ইজরায়েল (Israel) পর্যায়ক্রমে হামলা (Conflict) চালাচ্ছে। একের পর এক হামলায় ওই পারমাণুকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়ানো নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও খবর মেলেনি।
ইরানি সংবাদসংস্থা তাসিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে,” শত্রুপক্ষ ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে”। ইজরায়েলের এই হামলার পর ওই পরমাণুকেন্দ্রের পরিস্থিতি কী? ঠিক কতখানি ক্ষতি হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। সবচেয়ে বড় কথা, যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা, অর্থাৎ কিনা ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রটি থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়াচ্ছে কিনা তা এখনও পর্যন্ত অস্পষ্ট। উল্লেখ্য, গত ২০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যে ইরানে হামলা চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আমেরিকা। কার্যক্ষেত্রে বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে (ভারতীয় সময় রবিবার ভোরে) ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় ওয়াশিংটন। এরপর সোমবার ইজরায়েল হামলা চালাল ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে।
রবিবার সন্ধ্যায় (ভারতীয় সময়) এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানায়, ইরানের রাজনৈতিক কাঠামো বা শাসনব্যবস্থাকে বদলে দেওয়া তাদের মিশনের উদ্দেশ্য নয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেঠ এই বিষয়ে বলেন, “এই মিশন (ইরানের) শাসনব্যবস্থাকে পরিবর্তনের জন্য ছিল না।” হেগসেঠ আরও দাবি করেন, ইরানকে পরমাণু শক্তিধর হতে না দেওয়াই আমেরিকার লক্ষ্য। তিনি বলেন, “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মার্কিন সেনা এবং আমাদের বন্ধু ইজরায়েলের জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকির। ওদের আণবিক অভিসন্ধী যাতে নিষ্ক্রিয় করা যায়, সেই সঙ্কল্পেই একটি নির্ভুল অভিযানের অনুমতি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি (ট্রাম্প)।”
প্রসঙ্গত, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে, বহুবার মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। যদিও আজ পর্যন্ত তা প্রমাণিত হয়নি। এরমধ্যেই ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ, মার্কিন হামলা ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে। বিশেষজ্ঞের দাবি, দশকের পর দশক ধরে ইরানে মোল্লাতন্ত্র কায়েম রয়েছে। নেতৃত্বে খামেনেই। ক্রমশ জ্বালানি তেলের ভাণ্ডার ইরান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ইজরায়েল, আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্বের একাধিক দেশের জন্যে। মরুদেশের শক্তিধর দেশটির উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানো মানে মধ্যপ্রাচ্যের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানো। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, ঠিক সেই কারণেই খামেনেইকে নিকেশ করে ইরানের মোল্লাতন্ত্রের অবসান ঘটাতে চাইছে পেন্টাগন। গণতন্ত্র কিংবা নিদেন রাজতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেওয়াই উদ্দেশ্য। যদিও রবিবার প্রকাশ্যে সেই দাবি মানল না ওয়াশিংটন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.