Advertisement
Advertisement
Japan

হাত-পা অসাড়… গর্ভে চমকপ্রদ গল্প নিয়ে মোদির হাতে এল জাপানের সেই ‘দারুমা’ পুতুল

ভারতের সঙ্গে কী যোগ জাপানের বিশেষ দারুমা পুতুলের?

Japan's traditional Daruma Doll gifted to Narendra Modi, has Indian roots

২৯ আগস্ট, শুক্রবার। টোকিওয় মোদিকে দারুমা পুতুল উপহার।

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:August 29, 2025 8:20 pm
  • Updated:August 29, 2025 8:39 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-জাপান যৌথ আর্থিক ফোরামে যোগ দিতে শুক্রবার টোকিও গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী বিপুল সমারোহে অভ্যর্থনা জানানোর পাশাপাশি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে অদ্ভুত দর্শন এক পুতুল। জাপানের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক এই পুতুলের নাম ‘দারুমা’। পুতুলটি জাপানি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও এর যোগ রয়েছে ভারতের সঙ্গেও।

Advertisement

জাপানি এই পুতুল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গহীন শুধু মাথা বিশিষ্ট গোলাকার ও ফাঁপা। সাধারণত পুতুলটি লাল রঙের হয়, কঠোর মুখে চোখ সম্পূর্ণ সাদা। পুতুলের বিশেষত্ব হল, এর নিচের অংশটি ভারী হওয়ার কারণে পড়ে গেলেও ফের সোজা হয়ে যায়। যার ভিত্তিতে জাপানি প্রবাদ “নানাকোরোবি ইয়াওকি”, অর্থাৎ ‘সাতবার পড়ে গেলেও, আটবার উঠে দাড়াও।’ জাপানের দোকানপাট, রেস্তরাঁ, বাড়ি সর্বত্র এর দেখা মেলে। মানুষ বিশ্বাস করেন এই পুতুল সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও অধ্যবসায়ের প্রতীক।

বিশেষ এই পুতুলের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে ভারতের সঙ্গে। পুতুলটি তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের একজন সন্ন্যাসী দ্বারা অনুপ্রাণিত। দারুমা শব্দের উৎপত্তি বোধি ধর্ম থেকে। এই সন্ন্যাসী ৪৪০ খ্রিস্টাব্দে পল্লবদের রাজধানীতে জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে বৌদ্ধ জীবনধারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে তিনি চিন সফরে যান। সেখান থেকে যান জাপানে। জানা যায়, এই সাধক টানা ৯ বছর ধ্যানমগ্ন ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধ্যানস্থ থাকার কারণে তাঁর হাত-পা অসাড় হয়ে যায়। এই সময়কালে তাঁর যাতে ঘুম না আসে তাই নিজের চোখের পাতা উপড়ে ফেলেন নিজেই। যার জেরেই পুতুলে তাঁর চোখ উন্মুক্ত ও বড় বড়।

প্রথা অনুযায়ী দারুমা লাল রঙের হয়। শোনা যায়, একটা সময় এশিয়ায় গুটিবসন্ত ভয়াবহ আকার নিলে লাল রঙে অনুগ্রহ চাওয়া হয়েছিল দারুমার। সেই থেকে পুতুলের রং হয় লাল। এছাড়া হলুদ দারুমা সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রতীক, সাদা দারুমা ভালবাসা ও মিলনের প্রতীক। প্রতিটি দারুমার মুখের নিচে সোনালি অক্ষরে লেখা থাকে ‘ফুকু ইরি’। যার অর্থ, ‘সৌভাগ্য বহনকারী’। জাপানিরা নতুন বছরের শুরুতে দারুমা কেনেন। কারও কোনও ইচ্ছে থাকলে দারুমার এক চোখে রং ভরেন। মনে করা হয় এর মাধ্যমে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হল দারুমার। এক বছরের মধ্যে যদি ইচ্ছেপূরণ হয় সেক্ষেত্রে রং ভরা হয় অন্য চোখে। আর যদি ইচ্ছে পূরণ না হয় সেক্ষেত্রে পুতুল মন্দিরে নিয়ে গিয়ে ‘দারুমা কুইও’ নামের বিশেষ পুজোর পর তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ