সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত কয়েক বছর ধরেই যুদ্ধের আঁচে পুড়ছে পৃথিবী। কিন্তু ২০২৫ সালে যেন যুদ্ধের কালো মেঘ আরও কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করল। রাশিয়া-ইউক্রেন, ইজরায়েল-গাজা, আমেরিকা-ইরান, ইরান-ইজরায়েল দ্বন্দ্বের নানা রূপ বিশ্বজুড়ে। গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কথাও মাথায় রাখতে হবে। এবার যুদ্ধের আগুন কি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াকেও পোড়াবে? দুই দেশের সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করেছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে এক শিবমন্দির।
বুধবার সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় থাইল্যান্ডের দুই নাগরিক মৃত্যু হয়েছিল। বদলা নিতে বৃহস্পতিবার এফ ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে কম্বোডিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাল থাইল্যান্ড। পালটা কম্বোডিয়াও থাইল্যান্ডের ফ্যানম ডং রাক হাসপাতালে হামলা করেছে। এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ১১ থাই নাগরিকের মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। আহত ১৪। কিন্তু কেন হঠাৎই এমন গনগনে লড়াইয়ের আঁচে পুড়ছে দুই দেশ? জেনে নিন যুদ্ধের কেন্দ্রে থাকা সেই শিবমন্দিরের কথা।
BREAKING: 🔴
Cambodia has launched an attack on the Phanom Dong Rak Hospital in Thailand as clashes intensify between Cambodian and Thai forces.
— Open Source Intel (@Osint613)
দাংরেক পর্বতের উপরে অবস্থিত প্রিয়াহ ভিহিয়ার বা প্রিয়া বিহার শিবমন্দির। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমাও পেয়েছে এই মন্দির। থাইল্যান্ড দাবি করে এই মন্দির তাদের। যদিও কম্বোডিয়ার মত ভিন্ন। আর একে কেন্দ্র করেই ২০০৮ সাল থেকে সমস্যার তীব্র আকার ধারণ করে দুই দেশের মধ্যে। ইতিহাস বলছে, রাজা দ্বিতীয় উদয়াদিত্যবর্মণ এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। নবম থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোনও সময়ে এই মন্দির বর্তমানে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডেই অবস্থিত। খেমার রাজত্বের এই মন্দির আসলে এক বিরাট মন্দির চত্বরের অংশ, যেখানে কমপক্ষে দুটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে। যার অবস্থান প্রাচীন খেমার হাইওয়ের এক কৌশলগত গিরিপথে, যা কম্বোডিয়ার আঙ্কোর ভাটকে থাইল্যান্ডের ফিমাইয়ের সঙ্গে যুক্ত করে।
কম্বোডিয়ার দাবি, খেমার রাজত্বের ঐতিহাসিক সীমান্তরেখার সীমান্তে এই মন্দির অবস্থিত। যার মধ্যে কম্বোডিয়াও রয়েছে, আংশিক ভাবে রয়েছে থাইল্যান্ডের ভূখণ্ডও। কিন্তু থাইল্যান্ডের ব্যাখ্যা, এটি সুরিন প্রদেশে অবস্থিত। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত কম্বোডিয়াকেই মন্দিরের মালিকানা দিয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং দেবতার মন্দিরে বেড়েছে সৈনিকের আনাগোনা।
গত কয়েক বছরে এই স্থানে তীর্থযাত্রা পরিচালনার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে একটি বোঝাপড়া রয়েছে। কিন্তু শক্তি প্রদর্শন উভয়পক্ষের মধ্যেই জাতীয়তাবাদী অনুভূতি উস্কে দিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে কম্বোডিয়ার সেনা থাইল্যান্ডের সেনাকে চ্যালেঞ্জ করে বসে ওই এলাকায়। যদিও এপ্রিলের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হওয়ায় তখনকার মতো সমস্যা মেটে। কিন্তু ফের শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। যার কেন্দ্রে ওই ঐতিহাসিক শিবমন্দিরই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.