সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সুর নরম করেছিলেন। দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সমঝোতায় ভরসা রেখে আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি চেয়েছিলেন। কিন্তু পালটি খেয়ে ফের একবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দুষলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু সেই শেখ হাসিনা। ইউনুসের অভিযোগ, ভারত তাঁকে এখনও আশ্রয় দিয়েছে। আর সেখানে বসে তিনি যেসব বক্তৃতা দিচ্ছেন তার জন্য বাংলাদেশে অস্থিরতা বাড়ছে। ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে ওপার বাংলায় যা কিছু ঘটছে তা নিয়ে মুজিবকন্যা আর দিল্লিকে তোপ দেগে দায় ঝাড়ছেন ইউনুস।
এই মুহূর্তে চারদিনের ব্রিটেন সফরে রয়েছেন ইউনুস। লন্ডনে তাঁর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের। বাংলাদেশের ভোটের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে লন্ডনের চাথাম হাউসে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে মোদিকে তোপ দাগলেন ইউনুস। বলেন, “আমার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেখা হয়েছিল। তখন আমি তাঁকে বলেছিলাম, আপনি হাসিনাকে থাকতে দিয়েছেন। আমি আপনাকে আপনার নীতি বদলাতে জোর করতে পারিনা। কিন্তু দয়া করে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিন যে হাসিনা বাংলাদেশের কোনও মানুষের সঙ্গে যেন যোগাযোগ না করেন। তিনি যা কিছু বলছেন, যা কর্মসূচি ঘোষণা করছেন তাতে আমাদের দেশে উত্তেজনা বাড়ছে। কেন উনি আমাদের দেশকে অস্থির করছেন?”
ইউনুস ক্ষোভপ্রকাশ করে আরও বলেন, “আমার কথা শোনার পর মোদি বলেছিলেন, সোশাল মিডিয়ায় এইসব খবর ছড়াচ্ছে। আমরা কীভাবে সোশাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করব। এর উত্তরে আমি বলেছিলাম, আপনি কীভাবে এটা বলতে পারেন? আমাদের দেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আর আপনি সোশাল মিডিয়া বলে সমস্তটা এড়িয়ে যাচ্ছেন।” উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ‘গণ অভ্যুত্থানে’ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন হাসিনা। বোন রেহানাকে নিয়ে তড়িঘড়ি চলে আসেন ভারতে। দেশ ছাড়ার পর থেকে দিল্লিতে বসেই একাধিকবার বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে হাসিনাকে। রেহানা-সহ তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র ফাঁস করেছিলেন তিনি। এমনকী বলেছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে ফিরবেন। যা হয়েছে তার বিচার আল্লা করবে। স্বাভাবিকভাবেই এতে অস্বস্তি বেড়েছে ইউনুসের। আওয়ামি লিগ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দোহাই দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে মুজিবকন্যার প্রত্যর্পন নিয়ে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে টানাপড়েন তুঙ্গে। কারণ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক গণহত্যার মামলা-সহ শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। তাই মুজিবকন্যাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে চিঠি পাঠায় মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। যার কোনও উত্তর দিতে চায়নি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। পরে হাসিনার ভিসা বাতিল করে দেয় ঢাকা। কিন্তু তাঁর দিল্লিতে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় ভারত। এনিয়ে দুদেশের মধ্যে সংঘাতের আবহ আরও বাড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.