সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন রাজনীতিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এবার রাজনীতির কারণে নয়, বরং একটি চমকপ্রদ আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক চুক্তির জেরে। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্প গোষ্ঠীর নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার হলেন ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। ১০ মিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি শুধুমাত্র দুটি ধনশালী ও ক্ষমতাধর ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সংযুক্তি নয়, বরং ট্রাম্প গোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক রিয়েল এস্টেট চুক্তির ক্ষেত্রে একটি মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানি পরিচালিত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ট্রাম্প অর্গানাইজেশন যৌথভাবে মুম্বইয়ে একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। এই মেগা-প্রকল্পে ট্রাম্প গোষ্ঠীর নাম ও ব্র্যান্ড ব্যবহার করা হবে, যার বিনিময়ে ট্রাম্পের সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের ডেভলপমেন্ট ফি প্রদান করা হচ্ছে। সূত্র জানাচ্ছে, এই চুক্তি থেকে ট্রাম্প গোষ্ঠীর আয় ২০২৩ সালের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি হতে পারে। প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে শপথের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন মুকেশ আম্বানি। এই প্রকল্পটি রিলায়েন্সের অধীনস্থ একটি শাখা সংস্থার মাধ্যমে রূপায়িত হচ্ছে। ট্রাম্প ব্র্যান্ডের অধীনে অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ হচ্ছে।
এটি শুধুমাত্র বিলাসবহুল জীবনযাত্রার প্রতীক নয়, বরং দুই দেশের ‘কর্পোরেট কূটনীতির’ও একটি নতুন নজির বলে ধরা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত হতে পারে। এই চুক্তিকে ঘিরে ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ট্রাম্প বর্তমানে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ায়, তাঁর ব্যক্তিগত বিদেশি লেনদেন নিয়ে স্বচ্ছতার দাবি তুলেছে ডেমোক্র্যাট শিবির। অতীতে প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ও তাঁর পারিবারিক ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। বর্তমানে এই ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তি আরও সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে।
ভারতে রিলায়েন্স ও ট্রাম্প গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক নতুন নয় ২০১৪ সালের পর থেকে রিলায়েন্সের সঙ্গে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ব্যবসায়িক কথাবার্তা শুরু হয় এবং দিল্লি, পুণে, গুরুগ্রাম-সহ বেশ কিছু জায়গায় ট্রাম্প টাওয়ার নির্মাণ হয়েছে। তবে এবার মুম্বই প্রকল্পটি আকারে এবং আর্থিক দিক থেকে অনেক বড়। এই চুক্তি আবারও তুলে ধরেছে ব্যবসা ও রাজনীতি একে অপরের সঙ্গে কেমন অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত হয়ে। বিশেষ করে যখন তা দুই মহাশক্তিধর দেশের– আমেরিকা ও ভারতের প্রভাবশালী পরিবারের মধ্যে হয়ে থাকে। এখন দেখার, আগামী বছর হতে চলা আমেরিকার মিডটার্ম নির্বাচনের আগে এই আন্তর্জাতিক লেনদেন ট্রাম্পের পক্ষে একটি কৌশলগত সুবিধা হয়ে ওঠে, না কি রাজনৈতিক বাধার কারণ হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.