সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে (Nepal Protest) অন্তত ২১ জনের মৃত্যুর পর অবশেষে মাথানত করল নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকার। রাতে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হল, সোশাল মিডিয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার অনেক রাতে নেপালের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জানান, সরকারের তরফে রাতে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক করা হয়েছিল। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে সোশাল মিডিয়া উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নেপালের তরুণ প্রজন্ম।
নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিলই। সম্প্রতি সেদেশে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ ২৬ ধরনের সোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় আগুনে ঘি পড়েছে। প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছে সেখানকার তরুণ প্রজন্ম। রাস্তায় নেমে কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে তাঁরা। এমনকী একদল উত্তেজিত জনতা সংসদ ভবনের ভিতরে ঢুকে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে তরুণ তুর্কিরা। নামানো হয় সেনা। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে চলে জলকামান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গুলিতে ২১ বিক্ষোভকারীরর মৃত্যু হয়েছে। আহত ২৫০’র বেশি। গুরুতর এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার রাতে উচ্চপর্যায়ে বৈঠক ডাকে সরকার সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোশাল মিডিয়ার উপর থেকে সমস্ত রকম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।
সোশাল মিডিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর দেশের যুব সমাজের কাছে মন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন, তাঁরা যেন এই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। সোমবার রাত থেকে নেপালে ফের চালু হয়ে গিয়েছে ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলন এবার নতুন মোড় নিয়েছে। ছাত্র মৃত্যু, সরকারের লাগামছাড়া দুর্নীতি ও বেকারত্বকে হাতিয়ার করে আন্দোলনের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়ছে। এক আন্দোলনকারী বলেন, “দেশের যুবসমাজে বেকারত্ব ভয়াবহ আকার নিয়েছে। পড়ুয়াদের হত্যা করা হয়েছে। দুর্নীতির পাঁকে ডুবেছে সরকার। ফলে সরকারকে উৎখাত না করা পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে।”
এদিকে নেপালের পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে সতর্ক হয়ে উঠেছে ভারত সরকার। ভারত-নেপাল সীমান্তে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। এর কোনও প্রভাব যাতে ভারতের উপর না পড়ে তার জন্য সতর্ক হয়ে উঠেছে গোয়েন্দা বিভাগ। সন্দেহজনক সমস্ত গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.