Advertisement
Advertisement
Afghan women

‘পরপুরুষের ছোঁয়া লাগবে’, আফগানিস্তানে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মহিলাদের বাঁচাচ্ছে না উদ্ধারকারীরা

পরপুরুষের ছোঁয়া হারাম।

No skin contact with males, Afghan women left under earthquake rubble
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:September 5, 2025 7:52 pm
  • Updated:September 7, 2025 2:01 am   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ম যদি মানবতাকে পায়ে পিষতে থাকে তবে তার চেয়ে ভয়াবহ বোধহয় আর কিছু হতে পারে না। ঠিক সেই ঘটনাই ঘটছে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে। ‘ধর্মান্ধ’ তালিবানের হাতে উঠেছে আফগানিস্তানের শাসনভার। সেখানে অক্ষরে অক্ষরে পালিত হচ্ছে শরিয়ত আইন। ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সে নিয়মে কোনও বদল নেই। যার জেরে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে মৃত্যুর কালো ছায়া মহিলাদের উপর। শরিয়ত আইন অনুযায়ী পরপুরুষের ছোঁয়া হারাম, যার জেরে ভূমিকম্পে চাপা পড়া মহিলাদের বাঁচাচ্ছে না উদ্ধারকারীদল। যার পরিণতি, বাঁচার সুযোগ থাকলেও, সাহায্যে অভাবে মৃত্যুর ছোবল খেতে হচ্ছে আফগান মহিলাদের।

Advertisement

ভূমিকম্পের পর মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, মহিলাদের অধিকার কার্যত কেড়ে নেওয়ার জেরে সেখানে উদ্ধারকারী দলে মহিলাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ফলে ভূমিকম্পের পর যে সব মহিলারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন তাঁদের উদ্ধার করা হচ্ছে না। আহত অবস্থায় সেখানেই পড়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। এমনকী যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের দেহ কাপড়ে বেঁধে টেনে হিঁচড়ে বের করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে কপালজোরে রক্ষা পাওয়া কুনার প্রদেশের এক মহিলা বলেন, “উদ্ধারকারীরা আমাদের এক জায়গায় জড়ো করে ফেলে রেখেছে। কোনও সাহায্য করা হচ্ছে না।”

স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্য তাহজিবুল্লা মাহজিব বলেন, “উদ্ধারকারীদের কাছে নারীরা অস্পৃশ্য। তাঁদের বাঁচানোর কোনও চেষ্টা করা হচ্ছে না। গুরুতর আহত অবস্থায় যারা কোনওমতে বেঁচে গিয়েছেন তাঁদেরও বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা শুধুমাত্র পুরুষ ও শিশুদের বাঁচাচ্ছেন। মহিলারা একপাশে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। পুরুষ আত্মীয়স্বজনের অনুপস্থিতির কারণে কখনও কখনও তাঁদের পোশাক ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যাতে ত্বকের সঙ্গে কোনও স্পর্শ না হয়।” এদিকে রিপোর্ট বলছে, আফগানিস্তানের মর্মান্তিক ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২০০ জনের। আহতের সংখ্যা পেরিয়েছে ৩৬০০। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ পড়ে থাকলেও তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরইমাঝে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে শরিয়তের বিধিনিষেধ।

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে প্রথম তালিবান শাসনে মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিলেন মহিলারা। দ্বিতীয়বার তালিবান ক্ষমতায় আসার পর তাদের তরফে মহিলাদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ঠিকই, তবে বাস্তবে তা হয়নি। এখানে মেয়েরা ষষ্ঠ শ্রেণির পরে স্কুলে যেতে পারে না, পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বেশি দূর যাওয়ার অনুমতি নেই নারীদের। চাকরি ক্ষেত্র থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে মহিলাদের।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ