Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja Overseas

ঢাকের বাদ্যি থেকে ভোগের সুগন্ধ, নরওয়ের দুর্গোৎসব যেন বাঙালির মিলনমেলা

অরোরার দেশের উৎসবে প্রতিবছর উৎসবে শামিল হন ভারতের রাষ্ট্রদূত!

Norway Oslo Bengali cultural association's Puja Preparation
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:September 3, 2025 5:37 pm
  • Updated:September 3, 2025 6:01 pm  

অরোরার দেশে বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গোৎসবের সূচনা হয় ২০১০ সালে। কয়েকজন উদ্যোগী বাঙালি একত্রিত হয়ে সুদূর কলকাতার কুমোরটুলি থেকে দুর্গা প্রতিমা আনার ব্যবস্থা করেন। সংস্কৃতিমনা কিছু বাঙালির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দশ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে গর্বের উৎসবের। নরওয়ে থেকে লিখলেন দীপঙ্কর মান্না

Advertisement

দুর্গাপুজো সাধারণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং বাঙালি আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মিশে থাকা এক সাংস্কৃতিক উৎসব। শরৎ এলেই নীল আকাশের বুকে সাদা মেঘের ভেলা আর হাওয়ায় দুলতে থাকা কাশফুলের ছন্দে বাঙালির হৃদয়ে বাজতে শুরু করে ঢাকের বাদ্যি। এই আবেগ আজ আর শুধু বাংলার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই, প্রবাসে থাকা বাঙালিদের হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। বাদ যায়নি তুষার আর অরোরার দেশ নরওয়েও। সেখানকার বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গোৎসব যেন প্রবাসী বাঙালিদের মিলন মেলা! পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর দুর্গোৎসবের সময় রাজধানী ওসলো শহর মিনি কলকাতার রূপ নেয়। ঢাকের বাজনা, ধুনুচি নাচ, ভোগের সুগন্ধ আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন সেখানকার বাঙালিরা।

ওসলোর বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গোৎসবের সূচনা হয় ২০১০ সালে। কয়েকজন উদ্যোগী বাঙালি একত্রিত হয়ে সুদূর কলকাতার কুমোরটুলি থেকে দুর্গা প্রতিমা আনার ব্যবস্থা করেন। সংস্কৃতিমনা বাঙালির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দশ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে গর্বের উৎসবের। বর্তমানে এই উৎসব আর শুধুমাত্র বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষও উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে হাজির হন মণ্ডপে। এছাড়াও প্রতি বছর সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানি, এমনকী ব্রিটেন থেকেও অনেকে অংশ নেন ওসলোর দুর্গোৎসবে।

ঘরোয়া সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় ছোটদের নৃত্যানুষ্ঠান।

কোনও কমিউনিটি সেন্টার, নয়তো ভাড়া করা কোনও বড় হলে পুজোর আয়োজন হয়। সান্ধ্যকালীন সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে হয় কচিকাচাদের নাচ-গান-নাটক। সঙ্গে থাকে ভোগের আয়োজন। সব মিলিয়ে এক অনন্য আবহ সৃষ্টি হয়। ভারতের রাষ্ট্রদূতও প্রায় প্রতিবছর উপস্থিত থাকেন এই দুর্গোৎসবে, যা উৎসবের মর্যাদা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। উৎসুক স্থানীয় নরওয়েজিয়ানরাও অংশ হন আনন্দ উৎসবের। অর্থাৎ, শুভ্র তুষারের দেশে বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গোৎসব কেবল প্রবাসী বাঙালির উৎসব নয়, দিনে দিনে এটি হয়ে উঠেছে একটি আন্তর্জাতিক মিলনমেলা।

নরওয়ের দুর্গোৎসব বড়দের জন্য নস্টালজিয়ার মহোৎসব হলে, প্রবাসে জন্ম নেওয়া নতুন প্রজন্মের বাঙালির কাছে নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ। কারণ ওসলো শহরের দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং প্রবাসী বাঙালির ঐক্য, আবেগ ও সাংস্কৃতিক বনেদিয়ানার প্রাণবন্ত প্রতীক। প্রবাসের পূজামণ্ডপে কলকাতার মতো আড়ম্বরপূর্ণ জাঁকজমক থাকে না, প্রতিমাও সবসময় ঐতিহ্যবাহী নিপুণতায় গড়া হয় না। কিন্তু তাতে বাঙালি আবেগের এতটুকু ঘাটতি দেখা যায় না। বরং এই আয়োজনই প্রবাসীদের কাছে হয়ে ওঠে নিজের শিকড়কে ছুঁতে পারার এক মায়াবী যোগসূত্র।

বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনে দেবী দুর্গার আরাধনা।

তাই শারদোৎসবের পুণ্যলগ্নে শুধু বাংলার উষ্ণ বাতাসেই নয়, নরওয়ের হিমেল বাতাসেও প্রবাসী বাঙালির মনে অনুভূত হয় উষ্ণতার কোমল উত্তাপ। ঢাকের আওয়াজ হয়ে ওঠে প্রবাসী বাঙালির হৃদয়ের অনুরণন। সুদূর বিদেশেও সন্তানদের আশীর্বাদ করেন দশভুজা মা দুর্গা। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement