সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনরোষে নাজেহাল পাকিস্তানের শাহবাজ সরকার। অধিকৃত কাশ্মীর, বালোচিস্তানের পর এবার রাজধানী ইসলামাবাদেও দ্রোহের আগুন। আমেরিকার পুতুল হয়ে বসে থাকা শাহবাজ শরিফ, আসিম মুনিরদের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পাকিস্তানের কট্টরপন্থী সংগঠন ‘তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান’ (TLP)। সেই অভিযানের দ্বিতীয় দিনে ফের রক্ত ঝরল রাজধানী ইসলামাবাদে। রাওয়ালপিন্ডিতেও ছড়িয়েছে হিংসার আগুন। এই ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের, আহত অন্তত ৫০। পরিস্থিতি যে পথে এগোচ্ছে তাতে পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল।
টিএলপির অভিযোগ, আমেরিকার মদতে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। অথচ পাকিস্তান সরকার তার বিরোধিতা না করে আমেরিকার পুতুল হয়ে কাজ করছে। শাহবাজ ও মুনিরের এহেন আচরণের বিরুদ্ধেই ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয় টিএলপির তরফে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় আগেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয় ইসলামাবাদে। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন ইসলামাবাদে। মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে তারা রওনা দিলে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশবাহিনী। কাঁদানে গ্যাস, লাঠি চার্জের পাশাপাশি গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয় ২ জনের। শনিবারেও পরিস্থিতিতে কোনও বদল আসেনি। টিএলপির দাবি, শনিবার সকাল পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু জায়গায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যাপক পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে বহু পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
লাহোরের আজাদি চক এলাকায় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একাধিক পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ব্যাপক জনরোষ ঠেকাতে ইসলামাবাদের রেড জোনকে কার্যত দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস তো বটেই লাহোর, করাচি এবং পেশোয়ারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসগুলিতেও কড়া সতর্কতা জারি করেছে পাক সরকার। ইসলামাবাদের সমস্ত হোটেল খালি করে দেওয়া হয়েছে। ইসমালাবাদের মার্কিন দূতাবাসের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ‘এই বিক্ষোভের জেরে রাস্তাঘাট বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি যান চলাচলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিক্ষোভের সময় অজানা। পাকিস্তানে অবস্থিত মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে বার্তা তাঁরা যেন এই সমাবেশ এড়িয়ে চলেন ও আশেপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কের সচেতন থাকেন।’
এদিকে গত শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে টিএলপি প্রধান জানান, ”গ্রেপ্তারি কোনও বাধা নয়, বন্দুকের গুলি-শেলও আমাদের বাধা হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ নিজেদের কুরবানি দিতেই আমরা এসেছি।” অন্যদিকে টিএলপিকে কড়া হাতে দমন করতে তৎপর হয়েছে শাহবাজ সরকার। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী বলেন, এই দলটি গাজার সংঘাতকে হাতিয়ার করে দেশের অন্দরে হিংসা ছড়াতে তৎপর হয়েছে। বিক্ষোভকারীর হাতে লাঠি, রাসায়নিক, কাচের মার্বেল, কাঁদানে গ্যাসের শেল এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। যা স্পষ্ট করে ওরা হিংসা ছড়াতেই জড়ো হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের ভাড়াটে গুন্ডা বলে তোপ দেগেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.