সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গলা পর্যন্ত ঋণে ডুবে পাকিস্তান এবার ঘরের সম্পদ বিক্রির পথে হাঁটল। আমেরিকায় বিরল খনিজের প্রথম চালান পাঠাল পাকিস্তান। জানা যাচ্ছে, দেশের খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নের লক্ষে গতমাসে একটি মার্কিন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে পাকিস্তান। সেই চুক্তির ভিত্তিতে পাঠানো হয়েছে এই চালান। ‘গোপন চুক্তি’র ভিত্তিতে দেশের বিরল খনিজ আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনায় শাহবাজ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ।
পাক সংবাদমাধ্যম ডন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব বিরল খনিজ আমেরিকায় পাঠানো হয়েছে সেই তালিকায় রয়েছে অ্যান্টিমনি, কপার কনসেনট্রেট এবং বিরল খনিজ নিওডাইমিয়াম ও প্রসেওডাইমিয়াম। এই খনিজ পাঠানো হয় মার্কিন সংস্থা ইউএস স্ট্র্যাটেজিক মিনারেল ও পাকিস্তানের মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা ফ্রন্টায়ার ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের চুক্তির ভিত্তিতে। যে চুক্তির মাধ্যমে আমেরিকা পাকিস্তানে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। চুক্তির মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তানের বিরল খনিজ প্রক্রিয়াকরণে গতি আনা। এই বিরল খনিজের নমুনা আগেই পাঠানো হয়েছে আমেরিকায়।
সপ্তাহ খানেক আগে হোয়াইট হাউসের তরফে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল যেখানে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বাক্সের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়ে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির ও শাহবাজ শরিফ তাঁকে কিছু বোঝাচ্ছেন। ভাইরাল সেই ছবি বিরল খনিজের নমুনা বলে জানা যাচ্ছে। এর পরই আমেরিকায় বিরল খনিজের প্রথম চালান পাঠাল পাকিস্তান। আগামিদিনেও এই রপ্তানি চলতে থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু কেন আমেরিকাকে বিরল খনিজ বিক্রি করছে পাকিস্তান? জানা যাচ্ছে, বিপুল ঋণের জেরে জর্জরিত পাকিস্তান। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ-মুনিররা। যার জেরেই ব্রিফকেশ হাতে ট্রাম্পের কাছে পৌঁছন তাঁরা। এমন সুযোগ হাতছাড়া করেননি ট্রাম্প। এই খনিজ কিনতে রাজি হয়ে যান তিনি। তবে দেশের সম্পদ এভাবে গোপন চুক্তি করে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ইমরানের দল। এই রহস্যজনক চুক্তির বিরুদ্ধে বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, আধুনিক পৃথিবীর মূল চালিকাশক্তি হল বিরল খনিজ। প্রযুক্তি ক্ষেত্র এই খনিজ ছাড়া ভাবা যায় না। বর্তমানে বিরল খনিজে বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেছে চিন। ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিরল খনিজ মজুত রয়েছে চিনে। ৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন, দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিলে রয়েছে ২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন, তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারতে ৬.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। চিনের সঙ্গে আমেরিকার সংঘাতের জেরে বিরল খনিজ আমদানির বিকল্প খুঁজছে আমেরিকা। ট্রাম্পের সেই চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করে নিজেদের আখের গোছাতে মরিয়া পাকিস্তান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.