সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্ধুত্বের হাওয়া বদল! ব্যাকগ্রাউন্ড ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফোরগ্রাউন্ডে ভ্লাদিমির পুতিন। একেই কি বলে শাপে বর? আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্কঝড়ে কাছাকাছি ভারত ও রাশিয়া। সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উল্লেখ করলেন, কঠিন সময়েও পাশাপাশি থেকেছে ভারত-রাশিয়া। এর আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন। এমনকী তাঁর অত্যাধুনিক লিমোজিন গাড়িতে চড়ান মোদিকে। সেই ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। তাদের অপরিশোধিত তেলের বৃহত্তম ক্রেতা চিন ও ভারত। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এরপরেও অবশ্য মস্কের থেকে তেল কেনায় বিরতি দেয়নি দিল্লি। অন্যদিকে চিনের উপরে শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। সেই চিনও তেল কেনা বন্ধ করেনি। এই আবহে চিনে এসসিও সামিটে তিয়ানজিন শহরে মোদির বার্তা, “সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও ভারত এবং রাশিয়া সর্বদা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হেঁটেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা কেবল উভয় দেশের জনগণের জন্যই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।”
চিনে এসসিও বৈঠকে মোদি-জিনপিং-পুতিনের ছবি বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে এক নয়া সমীকরণের। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই সোমবার আলাদাভাবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন মোদি। সেখানেই যুদ্ধ থামিয়ে শান্তির উদ্দেশে পদক্ষেপের জন্য পুতিনকে বার্তা দেন তিনি। বলেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোনও গঠনমূলক পদক্ষেপকে ভারত স্বাগত জানায়। মানবতার খাতিরে এই যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত স্থায়ী শান্তির উপায় খুঁজে বের করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। পরে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। পাশাপাশি সতর্কবার্তা দিয়ে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালালে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফার নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।
হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পিটার নাভারো প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন, “ইউক্রেনে শান্তির রাস্তা দিল্লি দিয়েই যায়।” এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতকে কূটনৈতিকভাবে চাপে রাখতেই যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ করছে। তবে ভারত জানিয়েছে, এই শুল্ক আরোপ অন্যায্য এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিধির পরিপন্থী। সরকারি মহলের আশা, দেশীয় বাজারের ভরসায় এবং কৌশলগত বিকল্প খুঁজে নিয়েই ভারত অর্থনীতির ওপর চাপ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.