Advertisement
Advertisement

Breaking News

PM Narendra Modi

লন্ডনে মোদি, আজই হবে ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি! তারপরই নমোর ‘মিশন মালদ্বীপ’

মোদি সাক্ষাৎ করবেন রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও।

PM Narendra Modi's visits aim to strengthen trade ties with Britain
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:July 24, 2025 9:01 am
  • Updated:July 24, 2025 10:21 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২ দিনের সফরে ব্রিটেনে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাক্ষাৎ করবেন রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে। বৈঠকে বসবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে। সূত্রের খবর, এই সফরেই দু’দেশের মধ্য়ে স্বাক্ষর হবে বহু প্রতীক্ষীত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। পাশাপাশি খলিস্তানি চরমপন্থা নিয়েও বার্তা দিতে পারেন মোদি। এই গুরুত্বপূর্ণ সফর সেরে তাঁর পরবর্তী গন্তব্য় মালদ্বীপ। 

Advertisement

জানা গিয়েছে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার লন্ডনে পা রাখেন মোদি। বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এনিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স হ্য়ান্ডেলে লেখেন, ‘ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের নতুন অধ্য়ায় শুরু হল। লন্ডনে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সাক্ষাৎ করবেন রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে। বৈঠকে বসবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে। কৌশলগত দিক দিয়ে এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

রাজার দেশে পৌঁছে উচ্ছ্বসিত নমোও। তিনিও এক্স হ্য়ান্ডেলে লেখেন, ‘লন্ডনে পৌঁছালাম। এই সফর আমাদের দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। দু’দেশের জনগণের সমৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাপী অগ্রগতির জন্য ভারত-ব্রিটেনের মজবুত বন্ধুত্ব অপরিহার্য।’ লন্ডনে পৌঁছে এদিন তিনি দেখা করেন ব্রিটেনের প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে। তাঁকে সামনে থেকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন সকলে। আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটে থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মোদি বৈঠক করবেন স্টারমারের সঙ্গে। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার পরই হবে ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। যা নিয়ে সাড়ে ৬টার সময়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি। এরপর রাত ৯টা নাগাদ মোদি দেখা করবেন চার্লসের সঙ্গে। 

বহু বছর ধরেই মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দর কষাকষি চলছিল। অ্যালকোহল ও মোটর গাড়ির উপর ভারতের আরোপিত আমদানি শুল্ক হ্রাস করা, এবং কাজের উদ্দেশ্যে ভারত থেকে ব্রিটেনাভিমুখী কর্মপ্রার্থীদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ। অ্যালকোহল ও মোটরগাড়ির উপর আমদানি শুল্ক হ্রাসে নরম মনোভাব দেখালেও ‘অভিবাসন’ (ইমিগ্রেশন) ইস্যুতে ভারতের কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা প্রথম থেকেই বেশি ছিল। ২০২১ সালে বরিস জনসনের আমলে নতুন করে দু’দেশের মধ্যে এই চুক্তি আলোচনা শুরু হয়। তারপর লিজ ট্রাসের জমানাতেও জট খোলার কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। তাঁর মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম‌্যান মন্তব্য করেছিলেন যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হলে ব্রিটেনে ভারতীয় অভিবাসনের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তাতে নয়াদিল্লি তো বটেই, ব্রিটেনের ভারতীয়দের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। যার জেরে ব্রাভারম‌্যান পদত্যাগ করেন। তারপর দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি সামাল না দিতে পারার ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে লিজ ট্রাসকেও সরে যেতে হয়।

এরপর ২০২২ সালে ব্রিটেনের ক্ষমতায় আসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ফের নতুন করে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ২০২৩ সালে দিল্লি অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে এনিয়ে তিনি মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। যা ফলপ্রসুও হয়েছিল। তারপর এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল দুদেশের মধ্যে। কিন্তু এর মাঝেই ব্রিটেনে সরকার গড়ে স্টার্মারের লেবার পার্টি। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে স্টার্মারের বিদেশনীতির প্রধান বিষয় ছিল মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। যার পথ প্রশস্ত করার পাশাপাশি শিক্ষা, প্রযুক্তি, নিরাপত্তা-সহ নানা ক্ষেত্রে দিল্লির সঙ্গে একযোগে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এবার স্টার্মারের জমানাতেই জট কাটল বহু প্রতীক্ষিত এই চুক্তির। 

এদিকে, এই ব্রিটেন সফর সেরে মোদি যাবেন মালদ্বীপে। ক্ষমতায় এসেই দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। মালদ্বীপের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে এসে ভারত বিরোধীতার সুর শোনা যায় তাঁর গলায়। এর মাঝে গত বছরের শুরুতে লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে মোদিকে অপমান করে মুইজ্জুর ৩ দেশে। এরপর মালদ্বীপের অনুদানে বড়সড় কাটছাঁট করে দেয় দিল্লি। তার উপর রেকর্ড হারে ভারতীয় পর্যটক কমে যাওয়ায় জোর ধাক্কা খেয়েছে সেদেশের অর্থনীতি। ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মালদ্বীপ। এর ফলে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এক অনুষ্ঠানে ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেছিলেন মুইজ্জু। দুদেশের সম্পর্ক ঠিক করে নিতে চাইছেন তিনি। যাতে আগামিদিনে জনগণের ক্ষোভে গদি হারাতে না হয় তাঁকে। অন্য়দিকে, মালদ্বীপে উপর চিনের প্রভাব খর্ব করতে নতুন কৌশল নিচ্ছে ভারত। ফলে মোদির এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement