সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, নিউ জার্সি: ‘ভবানীপুরের তেতালা বাড়িতে/ আলাপ চলছে সরু মোটা গলায়…/ এবার আবু পাহাড় না মাদুরা/ না ড্যাল্হৌসি কিম্বা পুরী/ না সেই চিরকেলে চেনা লোকের দার্জিলিং।’ সেই রবিঠাকুরের আমল থেকেই বাঙালি চরৈবেতি মন্ত্রে দীক্ষিত। আর পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়াটাও যেন সেই কবে থেকেই বাঙালির পুজো উদযাপনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাঙালিয়ানাকে ষোলো আনা উদযাপনের মধ্যে দিয়েই আমাদের ত্রিনয়নীর সদস্যদের আনন্দ। তাই আমাদের দুর্গোৎসব পূর্ণতা পায় কখনও সত্যজিৎ ও বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালির যাত্রায়, আবার কখনও আমরা ফিরে যাই কৈশোরের স্মৃতির হাত ধরে ভালোবাসার কলকাতায়।
ত্রিনয়নীর পুজোর অন্যতম মুখ্য আকর্ষণ থিম। নিউ জার্সির বুকে নিত্য নতুন থিমের মোড়কে দুর্গাপুজোকে প্রতিবারই এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম। এবার আমাদের পুজোর ভাবনা রাজকীয় রাজস্থান। আমেরিকার পূর্ব উপকূলে আমরাই একমাত্র থিম পুজো করি। উট, হাতি আর ময়ূরের সজ্জায় নিউ জার্সির হিমেল হাওয়ায় মরুপ্রদেশের উষ্ণতা ছড়িয়ে যাবে। এই আশাতেই বুক বেঁধেছে ত্রিনয়নীর আট থেকে আশি। তবে আমাদের পুজো কিন্তু কলকাতার নির্ঘণ্ট মেনে হবে না। এবার আমরা পুজো করব ৪ ও ৫ অক্টোবর। প্রতিমা আসছে কুমোরটুলি থেকে। পুজোর পাশাপাশি হবে সঙ্গীতানুষ্ঠানও। রথীজিৎ আসছেন ৪ তারিখ। পরদিন অর্থাৎ ৫ তারিখ পারফর্ম করবেন অন্বেষা।
প্রতি বছর এই পুজোর দিনগুলো আমাদের মনের মধ্যে সেই পুরনো দিনগুলোকে ফিরিয়ে দিতে থাকে। কেবল ওই দিনগুলোতেই নয়, আগে থেকেই চলতে থাকে প্রস্তুতি। সকালে আমরা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আবার বাড়ি ফিরেই হয়ে যাই ছুতোর। তৈরি করি থিমের কাটআউট। ডিজাইন বানাই। সবই নিজেরাই হাতে করে বানাই। এই আনন্দ অসামান্য। এর কোনও তুলনাই হয় না। ঘর থেকে দূরে থেকেও পুজোর আলো-রোদ্দুর-নীল আকাশ ফিরে ফিরে আসে মনের গভীরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.