ঋতুপর্ণা ঘোষ: প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা! দেবী আসছেন। এই বঙ্গের মতো সাত সমুদ্র তেরো নদী পারে সুদূর আমেরিকার নর্থ ক্যালিফর্নিয়াতেও এখন সাজো সাজো রব! চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পুজোর দিনগুলিতে একটুকরো কলকাতা যেন ফুটে ওঠে নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ায়। একেবারে কলকাতার স্ট্রিট ফুড থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান… কিছুই বাদ যায় না। প্রবাসে থেকেও এ এক অন্য অনুভূতি।
নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ার বে এরিয়ায় থাকি। সান ফ্রান্সিসকোর আশপাশের জায়গাকে বে এরিয়া বলা হয়। সেখানে প্রতি বছরই ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয়। সাগরপাড়ের দুর্গা উৎসবের সাক্ষী থেকেছি বহু বছর। একটা কিংবা দুটো নয়, প্রবাসীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গ্রুপ এবং মন্দিরের পুজো মিলিয়ে এই এলাকায় ৮ থেকে ১০টি পুজো হয়। তবে সবথেকে জনপ্রিয় হল আগমনী দুর্গা পুজো। এই পুজোর সঙ্গে প্রবাসীর বড় অংশের আবেগ জড়িয়ে। শুধু তাই নয়, পুজোর দিনগুলিতে প্রত্যেকদিন তো বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাড়তি পাওনা। এই পুজোকে ঘিরেই বিভিন্ন স্টল, যেমন শাড়ি, জুয়েলারির স্টল তৈরি হয়। সঙ্গে কলকাতার স্ট্রিট ফুড তো আছেই।
এখানকার এক উল্লেখযোগ্য পুজো ‘বে এরিয়া সার্বজনীন’-এর। এই পুজোর নামটা শুনলেই কেমন যেমন বাগবাজার সার্বজনীনের কথা মনে পড়ে যায়। এই পুজো একেবারে রীতি মেনে করা হয়। প্রতিমা হয় সাবেকি। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। ছোটবেলার সেই ভালো লাগাটা কেড়ে নিতে পারেনি আধুনিকতার ভিড়। প্রবাসে কলকাতার মতো বিশাল আকারে পুজো না হলেও ছোট জায়গাতেও নিষ্ঠা মেনে তা করা হয়। ভিনদেশে পুজো হলেও প্যান্ডেল থেকে আলোজসজ্জা কোনও কিছুরই ঘাটতি থাকে না। মনেই হয় না, এটা কলকাতা নয়!
আরেকটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য পুজো যার কথা না বললে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, সেটি হল ‘অপরাজিতা দুর্গা পুজো’। এই পুজো একেবারে মহিলা পরিচালিত। সমস্ত বিধি, নিয়ম মেনে খুব সুন্দর ভাবে পুজোটি করা হয়। তবে আনন্দের মাঝেই বিষাদের সুর থাকে!
একটাই দুঃখ যে, প্রবাসের মাটিতে পুজো হয় শনিবার এবং রবিবার। কিন্তু একের পর এক পুজো দেখে, কলকাতার স্ট্রিট ফুড খেয়ে সেই দুঃখে কিছুটা প্রলেপ পড়ে। তবে পুজোর শেষদিনে জমজমাট সিঁদুর খেলা। সব মিলিয়ে জমে যায় উইকেন্ড! বলছেন ঋতুপর্ণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.