অর্ণব দাস: শরতের আকাশ, কাশফুলের দোল আর দশভুজার আগমনে সুদূর সুইডেনে ফুটে উঠেছে একটুকরো বাংলার ছবি! পৃথিবীর অন্যতম সুখী দেশের রাজধানীতে এখন হিমেল হাওয়া। কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের হাত ধরে এখানেও এখন শরতের ছোঁয়া। তাতে মেতে উঠতে উত্তেজনায় ফুটছেন সকলে। এবছর প্রবাসে দুর্গাপুজো হবে আগামী সপ্তাহান্ত অর্থাৎ ৩,৪,৫ অক্টোবর। কিন্তু স্টকহোম পুজো কাউন্সিলের সদস্যরা রীতি তিথি মেনেই প্রতি বছর করে আসছেন দুর্গাপুজো। কুমারী পূজা থেকে কলা বউ স্নান-সহ সন্ধিপূজা, অষ্টমীর অঞ্জলি, মায়ের দর্পণ বিসর্জনের আগে সিঁদুর খেলা, সবটাই হয় বাঙালি পঞ্জিকা মতে।
তবে এবছর পুজোর হাত ধরে স্টকহোমের বাঙালিরা বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। একেবারে বাঙালি সাজে মণ্ডপে থাকবেন সব মহিলারা। ধুনুচি হাতে, ঢাকের তালে নাচবেন তাঁরা। পুজোর কয়েকটা দিন সকলেই খাবেন নিরামিষ, খাওয়াদাওয়া হবে কাঁসার বাসনে। পুজোর ক’দিন অন্য কোনও ভাষা নয়, সকলে বাংলায় কথা বলবেন। আর মণ্ডপ শয্যায় থাকছে বাংলা স্বরলিপির ছোঁয়া।
এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ডাঃ দেবযানী দে। পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা ১২জন। এঁদের কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়র, কেউ আবার চাকরিজীবী, কেউ ব্যবসায়ী। সকলেই কমবেশি ৩৫-৪০ বছর ধরে রয়েছেন স্টকহোমে। এছাড়া অনেক অবাঙালি ভারতীয়, বাংলাদেশ, মরিশাস, মালয়েশিয়ার প্রবাসীরাও দেবযানীদের আয়োজিত পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। আমন্ত্রিত থাকেন ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকরাও। এবছর সপ্তম বর্ষে তাঁদের পুজোয় ফাইবারের তৈরি উমা কলকাতার কুমোরটুলি থেকে জাহাজে পৌঁছে গিয়েছে স্টকহোমে। মণ্ডপ সাজানো হয়েছে ওড়িশার পিপলি গ্রামের রঙিন হস্তশিল্প ‘অ্যাপ্লিক’ আর্ট দিয়ে। একইসঙ্গে বাঙালির সংস্কৃতি তুলে ধরতে স্বরলিপিও ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপ শয্যায়।
উদ্যোক্তা দেবযানী দে জানিয়েছেন, ”এদেশে সপ্তাহান্তে দুর্গাপুজো করার চল। তাই তখন আনন্দ করলেও সেই তৃপ্তি হত না। সেই ভাবনা থেকেই দুর্গাপুজোর দিন পঞ্জিকা মেনে আমরা পুজো শুরু করি। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে আমরা বাঙালিয়ানা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। তাই, মণ্ডপ সজ্জা থেকে খিচুড়ি, নিরামিষ খাওয়াদাওয়া-সহ মণ্ডপে নিজের মাতৃভাষাতেই কথা বলব। আগামী ১২ অক্টোবর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বাঙালিয়ানা বজায় রেখে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.