সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার খেয়ে পালটা মার৷ সবক্ষেত্রে অবশ্য প্রত্যক্ষভাবে মারামারির প্রয়োজন হয় না৷ ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘাত-প্রত্যাঘাতের লড়াই হয় বেশি৷ ঠিক সে পথেই হাঁটল ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিখ কন্যা মুনসিমর কউর৷ বছর দশের মেয়েটি যেভাবে বন্ধুদের কাছে ব্রাত্য হয়েছে, তারই পালটা হিসেবে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বক্তব্যে সবটা স্পষ্ট করেছে৷ দশম বর্ষীয়া কন্যার সেই বক্তব্যই এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল৷
লন্ডনের বাসিন্দা মুনসিমর রোজকার মতো বৃহস্পতিবারও বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল পার্কে৷ অন্যদিনের মতোই বন্ধুদের সে ডাকে খেলার জন্য৷ কিন্তু এই দিন তার একেবারে অন্যরকম অভিজ্ঞতা হল৷ মুনসিমরের চেয়ে বয়সে বড় দুজন ছেলে এবং দুই মেয়ে এসে তাকে জানায়, ‘আমরা তোকে খেলতে নেব না৷ তুই আপাতভাবে খুবই বিপজ্জনক৷ শুনেছি, তুই সন্ত্রাসবাদী৷’ একথা শুনে আর স্থির থাকতে পারেনি মুনসিমর৷ পরেরদিন ফের মাঠে যায়৷ বয়সে ছোট একটি মেয়ের সঙ্গে খেলাও করে৷ কিন্তু সেখানেও আরেক অভিজ্ঞতা৷ মেয়েটির মা তাকে ফোন করে বলে, মুনসিমরের সঙ্গে খেলার দরকার নেই৷ সে যেন বাড়ি ফিরে যায়৷
পরপর দুদিন এমন ঘটনা,শ্বেতাঙ্গ বন্ধুদের কাছে ব্রাত্য হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা তাকে যত না বিঁধেছে, তার চেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে, তার সম্প্রদায়কে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে দেগে দেওয়ায়৷বন্ধুদের মুখের উপর কিছু বলতে না পারলেও,বাড়ি ফিরে দশ বছরের মেয়েটি সিদ্ধান্ত নেয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সে এর প্রতিবাদ জানাবে৷ সেইমতো টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তার বাবা৷ যেখানে মুনসিমর তার সঙ্গে হওয়া অন্যায়, অবহেলার কথা তুলে ধরেছে৷ সে বলেছে, সেদিন বন্ধুদের কথাগুলো কীভাবে তার হৃদয় ভেঙে দিয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও সে মাথা উঁচু করে মাঠ থেকে সে বাড়ি ফিরেছিল৷ মুনসিমর আরও বলেছে, শিখদের সম্পর্কে সকলের সঠিক ধারণা নেই৷ তবে তারা যে স্বভাবজাত বেশ যত্নবান এবং সকলকে আপন করে নিতে জানে, এই বার্তা দিতেও ভোলেনি দশ বছরের মেয়েটি৷
Racist Park
— Sikh Dad (@sikhdad)
My eldest daughter Munsimar Kaur, aged 10, tells her own true story. Today it was my child tomorrow it could be yours.
টুইটারে তা ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনরা তার এমন অভিনব প্রতিবাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ ছোট মেয়েটির কথা অনেকেই মন দিয়ে শুনছেন৷ এসবের মাঝেও উদ্বেগের বিষয় থেকেই যাচ্ছে৷ বিদেশে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্বেষের বিষ, এই ঘটনা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ৷ এমনিতেই নয় এগারো হামলার পর মার্কিন মুলুকে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন ‘সন্ত্রাসবাদী’ বনে গিয়েছিলেন প্রশাসনের কাছে৷ লাদেনের চেহারার সঙ্গে শিখদের দাড়ি এবং পাগড়ির মিল থাকায় এই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল৷ পরে তা মিটলেও, লন্ডনবাসীর মধ্যে সেই ভ্রান্ত ধারণা রয়ে গিয়েছে৷ নাহলে কি আর মাত্র ১০ বছরের মেয়েকে এমন শিকার হতে হয়?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.