সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাবুলের প্রত্যাঘাতে ৫৮ জন পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। রবিবার এমনটাই দাবি করল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দিনে পাকিস্তান যদি হামালা চালায়, তাহলে তার কড়া জবাব দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামাবাদের মাটিকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করছে। কাবুলের প্রত্যাঘাতের পরই প্রশ্ন উঠছে, এবার কি যুদ্ধে জড়াতে চলেছে দুই প্রতিবেশী দেশ? অন্যদিকে, এই যুদ্ধ আবহে ‘বন্ধু’ সৌদি আরবের দিকেও তাকিয়ে আছে পাকিস্তান। কারণ, সম্প্রতি তারা সৌদির সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন করেছে।
তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ, “পাকিস্তান তার মাটিতে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতি সম্পর্কে অন্ধ। নিজেদের সীমান্ত এবং মাটি রক্ষা করার অধিকার আফগানিস্তনের রয়েছে। পাশাপাশি, যদি কোনও হামলা হয়, তার কড়া জবাব দেওয়ার অধিকারও রয়েছে দেশটির। পাকিস্তানের উচিত তাদের মাটিতে থেকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীকে উৎখাত করা। এধরনের জঙ্গি গোষ্ঠী আফগানিস্তানের কাছেও সমস্যার বিষয়।” তাঁর মতে, কাবুলে সাম্প্রতিক হামলায় পাক সেনার পাশাপাশি জড়িত ছিল ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীও।
পাকিস্তানে এই হামলার পরই মুখ খুলেছে ‘বন্ধু’ সৌদি। তারা দুই দেশকেই সংঘাতে না গিয়ে সংযম দেখানোর বার্তা দিয়েছে। জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা জরুরি। উভয় দেশেই শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছে রিয়াধ। কিন্তু এই যুদ্ধ আবহে আসলে সৌদির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে ইসলামাবাদ। কারণ, সম্প্রতি তারা সৌদির সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই চুক্তি বলা হয়েছিল, সৌদির হোক কিংবা পাকিস্তান, কোনও একটি দেশে আক্রমণ হলে অপর দেশটি তাকে রক্ষা করবে। তাহলে এই পরিস্থিতিতে সৌদি এখন কী করবে? সেটাই এখন প্রশ্ন। যদিও এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি রিয়াধ।
শনিবার রাতে পাকিস্তান সীমান্তে হামলা চালায় তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগান সেনা। ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১৫ জন পাক জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও তালিবান দাবি করছে সেই সংখ্যাটা আসলে ৫৮। শুধু তাই নয়, ডুরান্ড লাইন বরাবর কুনার এবং হেলমান্দ প্রদেশ-সহ বেশ কিছু জায়গায় থাকা পাক সেনার আউটপোস্টও দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
আফগান সেনা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাবুলে পাক সেনা যে বিমান হামলা চালিয়েছিল, তার প্রতিশোধ নিতেই পালটা পাকিস্তানের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণাকের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেন, “আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান যে হামলা চালিয়েছিল, তাঁর বদলা নিতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে। আফগানিস্তানের মাটিতে যদি ফের কোনও হামলা চালানো হয়, তাহলে তার কড়া জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.