ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ইউ টার্ন পাকিস্তানের। ভারত-পাক যুদ্ধে আমেরিকাকে মধ্যস্থতা করতে বলা হয়নি ইসলামাবাদের তরফে। সম্প্রতি এমনটাই জানালেন পাক বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। তিনি আরও বলেন, “কাশ্মীর-সহ সকল অমীমাংসিত বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত।” ‘সিঁদুর’ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের এই অবস্থান বদল আন্তর্জাতিক স্তরে শুধু তাদেরই নয়, নাম ডোবালো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও। ভারতের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের আবহে পাকিস্তানের এই বক্তব্য বেকায়দায় ফেলবে ট্রাম্পকেও।
সম্প্রতি পাক সংবাদমাধ্যমে সেদেশের বিদেশমন্ত্রী স্বীকার করেন যে অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামাবাদ নিজেই যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল। তিনি বলেন, “আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনও দেশকে আলোচনার ব্যবস্থা করতে বলিনি। যুদ্ধবিরতির অনুরোধ পাকিস্তান থেকেই গিয়েছিল।” দারের দাবি, সংঘর্ষের সময়ে আমেরিকার তরফে নিরপেক্ষ জায়গায় আলোচনার অনুরোধ করা হয়।
ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দুই দেশের তরফ থেকে আসার আগেই ঘোষণা করে দেন ট্রাম্প। এই মধ্যস্থতার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দাবি করে ট্রাম্প বলেন, নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে “শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্যস্থতা করেছে” ওয়াশিংটন। তাঁর দাবিকে সরাসরি সমর্থন করে পাকিস্তান। পাক সরকারের তরফে সোশাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কৌশলী কূটনীতিতে ভারত ও পাকিস্তান, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সমঝোতায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর হস্তক্ষেপেই সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। যদিও প্রথম থেকেই এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে ভারত। কোয়াড সম্মেলনে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়ে জয়শংকর বলেন, “আমাকে মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও বলেন যে পাকিস্তান আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। সেদিন দুপুরেই পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লা ফোন করেন ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইকে। সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানায় পাকিস্তান।” তবে কথা বলার সময়ে একবারও মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করেননি জয়শংকর।
যদি পাকিস্তান এবং ভারত কেউই ট্রাম্পের কাছে মধ্যস্থতার দাবি না জানিয়ে থাকে তাহলে কেন এগিয়ে এলেন ট্রাম্প? যুদ্ধের পরেই রুশ তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপরে শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। তাই অনেকেই মনে করছে, মধ্যস্থতাকে হাতিয়ার করে বাণিজ্যে মার্কিন লাভ খোঁজাই মূল উদ্দেশ্য ছিল তাঁর। এই অবস্থায় নিজেদের আগের দাবি থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে পাকিস্তানের নতুন দাবি অস্বস্তি বাড়াবে ট্রাম্পের। পাকিস্তান শুরুতেই যুদ্ধ বন্ধের জন্য ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়ার দাবি তোলে। তাই এখন উল্টো সুর, ট্রাম্পের নোবেল জয়ের আশাতেও জল ঢালবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.