সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার উপর সরাসরি আঘাত হানার সাহস নেই, তাই আমেরিকার নিষ্ফল আক্রোশের শিকার ভারত! রবিবার এক সাক্ষাৎকারে কার্যত সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। ভারতের উপর দ্বিতীয় দফায় বাড়তি শুল্ক চাপানোর কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্পের ডেপুটি জানালেন, রাশিয়ার জ্বালানি তেলের অর্থনীতি ধ্বংস করতেই ভারতের উপর ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’-এর মতো অর্থনৈতিক কোপ বসানো হয়েছে। ভান্সের আশা, এর মাধ্যমেই ইউক্রেনের উপর হামলা বন্ধ করে যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হবে রাশিয়া।
সম্প্রতি এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ বিরতিতে মার্কিন মধ্যস্থতা কতদূর অগ্রসর হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেন ভান্স। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি গত কয়েক সপ্তাহে দুই তরফেই উল্লেখযোগ্য নমনিয়তা দেখা গিয়েছে।” যদিও বাস্তব বলছে, ইউক্রেনে রুশ হামলার ঝাঁজ আগের তুলনায় আরও বেড়েছে এবং ইউক্রেনের আরও দুটি গ্রামের দখল নিয়েছে রাশিয়া। এই অবস্থায় ভান্সকে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “রাশিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা না চাপালে ওদের কী দমানো সম্ভব? সেক্ষেত্রে কীভাবে আলোচনা ও হামলা বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হবে?”
এর উত্তরে ‘আত্মবিশ্বাসী’ ভান্স বলেন তেমন পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। যেমন ভারতের উপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার পক্ষে নিজেদের খনিজ তেল নিভর অর্থনীতিতে ধনী হওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। ট্রাম্প স্পষ্ট বলেছেন, রাশিয়া যদি হত্যা বন্ধ করে তবেই তাদের ফের বিশ্ব অর্থনীতিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। অন্যথায় বিশ্ব অর্থনীতি থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।” ভান্সের মন্তব্যে স্পষ্ট যে রাশিয়ার উপর সরাসরি আঘাত হানতে না পেরে আমেরিকার নিষ্ফল আক্রোশ মেটাচ্ছে ভারতের উপর। এদিকে রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারী দেশ চিন। তাদের নিয়ে অবশ্য কোনও মাথাব্যাথা নেই ওয়াশিংটনের। ফলে ভান্সের দাবি ধোপে টিকছে না একেবারেই।
উল্লেখ্য, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না হওয়ায় প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ, পরে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের দাবি, ভারতের তেল কেনার জন্যই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে। যদিও ভারত আমেরিকার এ দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের যুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং অপরিশোধিত তেল কিনছে। আমেরিকাও রুশ পণ্য কেনায় পিছিয়ে নেই। এই অবস্থায় ভারতের উপর শুল্ক চাপানো অন্যায়। স্পষ্টভাবে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যেখানে কম দামে তেল পাওয়া যাবে সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.