সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি রদের আদেশ কোর্টের। আমেরিকার এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতা-বহির্ভূত কাজ করেছেন। তিনি আইনসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিভিন্ন দেশের উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়েছেন। কিন্তু আদালতের এই আদেশের কাছে মাথা নত করতে রাজি নয় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের পালটা যুক্তি, চিনের আগ্রাসন দমন আর ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত থামাতে ‘শুল্কবাণ’ প্রয়োগ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট। ফলে কোর্টের এই নির্দেশে সবটাই ঘেঁটে যাবে। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে পালটা আপিল করতে চলেছে হোয়াইট হাউস।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে বিভিন্ন দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই মতোই গত ২ এপ্রিল নয়া শুল্কনীতি প্রয়োগ করেন তিনি। এমনকী এই দিনটিকে আমেরিকার ‘লিবারেশন ডে’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব বাণিজ্যে। ওয়াশিংটনের উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে ‘বদলা’ নিয়েছে চিন। এই ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’র মাঝে ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল আমদানিকৃত পণ্যের উপর নির্ভরশীল আমেরিকার বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। যার শুনানিতে গতকাল বুধবার ম্যানহাটনের ওই কোর্টের তিন বিচারক জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর আইনি বাধ্যবাধকতার বাইরে বেরিয়ে কাজ করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসে বিষয়টি আলোচনা না করে একাই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অতিরিক্ত শুক্ল আরোপ করার পিছনে ট্রাম্পের যুক্তি ছিল, বিভিন্ন দেশ আমেরিকার উপর অতিরিক্ত হারে কর চাপায়। যার মধ্যে ভারত অন্যতম। তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে মার্কিন ব্যবসায়ীরা ধাক্কা খাচ্ছেন। অর্থনীতির উপর প্রভাব পড়ছে। এটা দেশে জরুরী অবস্থার সমান। তাই ঘাটতি কমিয়ে আমেরিকার ব্যবসা চাঙ্গা করেই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এদিন আদালতের এই রায়ের প্রেক্ষিতে ট্রাম্প সরকার ১৯৭৭ সালে কার্যকর হওয়া ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট’কে ঢাল করে। কিন্তু আদালত পালটা জানায়, আপৎকালীন এই আইনও প্রেসিডেন্টকে অন্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ করে আমেরিকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার চূড়ান্ত ক্ষমতা দেয় না। এই আইন জরুরি অবস্থায় প্রেসিডেন্টকে কেবল কিছু প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা দিয়েছে। এর অতিরিক্ত কিছু নয়।
কিন্তু এই রায় মেনে নিচ্ছে না হোয়াইট হাউস। মুখপাত্র কুশ দেশাই জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে পালটা আপিল করা হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, চিনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই শুল্কনীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। পাশাপাশি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামাতেও এর ব্যবহার করা হয়েছে। শুল্ক যদি রদ হয় দু’দেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই। তার আগেই আদালতে ধাক্কা খেল এই শুল্কনীতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.