সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারকের কেদারা থেকে কি তাহলে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে চলেছেন দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি (Sushila Karki)? সব ঠিক ঠাক থাকলে তেমনটাই হতে চলেছে। বুধবার ৫ হাজার যুব আন্দোলনকারী একটি ভারচুয়াল বৈঠক করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে কারকির নাম প্রস্তাব করেছে। কিন্তু কে এই কারকি? প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কেনই বা তাঁর পক্ষে এত বেশি সমর্থন মিলেছে?
১৯৫২ সালের ৭ জুন নেপালের বিরাটনগরের শঙ্করপুরে জন্ম কারকির। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করেছেন উত্তরপ্রদেশের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জীবনের প্রথম দিকে কারকি ছিলেন শিক্ষিকা। পরে ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালে তিনি নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। ঘটনাচক্রে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক পরিষদই কারকিকে সেই পদে বসায়। বিচারপতি থাকাকালীন তিনি একাধিক যুগান্তকারী রায় দিয়েছিলেন এবং নিজেকে একজন সংস্কারবাদী হিসাবে তুলে ধরেছিলেন। দুর্নীতির দায়ে নেপালের প্রাক্তন মন্ত্রী জয়প্রকাশ গুপ্তকে তিনি দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। জয়প্রকাশ ছিলেন নেপালের প্রথম কোনও মন্ত্রী, যিনি দুর্নীতির দায়ে জেলে যান। এছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনে দুর্নীতি থেকে শুরু করে বিতর্কিত নিজগড় ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প – বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলার সঙ্গেও তিনি যুক্ত কারকি। এরপর ২০১৭ নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি এবং নেপালি কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব আনে। তবে ব্যাপক জনসমর্থন জেরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
অন্তর্বতী নেতা হিসাবে প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহের নাম উঠছিল। জেন জি-র তরফে তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। নেপালের সংবাদমাধ্যমকে ‘জেন জি’র এক প্রতিনিধি বলেন, “যেহেতু তিনি (বলেন শাহ) আমাদের ফোন ধরেননি, তাই আলোচনা করে অন্য নামে চলে যাই। সবচেয়ে বেশি সমর্থন মেলে সুশীলা কারকির পক্ষে।”
জানা গিয়েছে, তরুণ প্রজন্ম কারকির কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেল তিনি সমর্থনের জন্য কমপক্ষে ১,০০০ লিখিত স্বাক্ষর চেয়েছিলেন। যদিও তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে সমর্থন করে ২,৫০০ এরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে ইতিমধ্যে। তবে কারকি সম্মতি দিলেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এর জন্য প্রথমে তাঁকে সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল অনুমোদন দিলে তবেই কুরসিতে বসতে পারবেন কারকি। এরপর কি শান্তি ফিরবে বুদ্ধের দেশে? উত্তর দেবে সময়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.