সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরান ও ইজরায়েল যুদ্ধের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবার সরাসরি প্রবেশ করেছে আমেরিকা। ইজরায়েলের হাতে হাত রেখে রবিবার ভোররাতে হামলা চালানো হয়েছে ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্র ফরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে। এর আগেও এখানে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল। ফের কেন এই তিন কেন্দ্রকে বেছে নিল আমেরিকা? ইরানের পরমাণু প্রকল্পের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ এই তিন কেন্দ্র? দেখে নেওয়া যাক এই তিন পরমাণু কেন্দ্রের বিস্তারিত।
নাতানজ: এই গবেষণা কেন্দ্রকে ইরানের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র বলে মনে করা হয়। মাটির নিচে রীতিমতো বাঙ্কার তৈরি করে তার ভেতরে চলে গবেষণা। এখানে মাটির উপরে রয়েছে ৬টি ও মাটির নিচে রয়েছে ৩টি স্থাপনা। এর চারপাশে কয়েক মিটারের কংক্রিটের ও পাথরের দেওয়াল এই কেন্দ্রকে নিরাপত্তা দেয়। এর আগে বহুবার এখানে সাইবার অ্যাটার্ক হয়েছে ঠিকই তবে প্রাকৃতিকভাবে এর নিরাপত্তাবলয় যে কোনও বড় হামলা থেকে এই কেন্দ্রকে রক্ষা করে। জানা যায়, এর ভুগর্ভস্থ দুটি স্থাপনায় ৫০ হাজার সেন্ট্রিফিউজ রাখার ক্ষমতা রয়েছে। ইজরায়েলের হামলায় এই পরমাণু কেন্দ্রের উপরিভাগ ‘পাইলট ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট’ ধ্বংস করেছিল ইজরায়েল। দাবি করা হচ্ছে, এরপর আমেরিকার বাঙ্কার ব্লাস্ট বোমার হামলায় এর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফরদো: নাতাঞ্জের পর পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণস্থান তেহরানের দক্ষিণে কোম শহরে অবস্থিত ফরদো। ২০০৯ সালে পাহাড় খুঁড়ে এটি নির্মাণ করা হয়। যে কোনওরকম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে এই কেন্দ্রকে সুরক্ষা দেয় চারপাশে থাকা জগদ্দল পাহাড়। এই কেন্দ্র সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য সামনে না এলেও জানা যায়, ভূপৃষ্ঠের ৮০ থেকে ৯০ মিটার নিচে অবস্থিত এর স্থাপনাগুলি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ফরদো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট’-এ ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়ামকে ২৩৩ কেজি অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়ামে রূপান্তর করতে ইরানের মাত্র তিন সপ্তাহ লাগতে পারে। যা দিয়ে ৯টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার দাবি অনুযায়ী, এখানে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭০০টি সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে।
ইসফাহান: রবিবার ভোররাতে চলা মার্কিন হামলার তৃতীয় টার্গেট ছিল এই ইসফাহান। ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এই কেন্দ্রকে দেশটির সবচেয়ে বড় পারমাণবিক গবেষণা কমপ্লেক্স হিসেবে ধরা হয়। জানা যায়, এই গবেষণাগার চিনের সাহায্যে তৈরি করেছিল ইরান। ১৯৮৪ সাল থেকে চালু হওয়া এই গবেষণাগারে ইরানের প্রায় তিন হাজার বিজ্ঞানী কাজ করেন। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূলকেন্দ্র হিসেবে ধরা হয় এটি। এখানে তিনটি ছোট গবেষণা চুল্লি, কনভার্সন ফ্যাসিলিটি, জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র, একটি জিরকোনিয়াম ক্ল্যাডিং কারখানা-সহ আরও নানান স্থাপনা রয়েছে বলে জানা যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.