সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেটে খিদের জ্বালা। এই অবস্থায় ঘরে বসে থাকলে অনাহারে মৃত্যু নিশ্চিত। অন্যদিকে, ত্রাণ শিবিরে খাবার আনতে গেলে গুলি করে মারছে ইজরায়েলের সেনা। সবমিলিয়ে গাজাবাসীর জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। শনিবার ফের সেই ছবি দেখা গেল গাজায়। খাবার ও আশ্রয়ের খোঁজে গিয়ে ইজরায়েলের সেনার গুলিতে মৃত্যু হল গাজার ২৫ জন নাগরিকের। ভয়াবহ এই তথ্য সামনে এনেছে স্থানীয় হাসপাতাল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে দক্ষিণ গাজায় হামলা চালায় ইজরায়েলের সেনা। সেই সময় ত্রাণ শিবিরে সংগ্রহের জন্য যাচ্ছিলেন বহু মানুষ। পাশাপাশি বহু বাস্তুচ্যুত ত্রাণ ইউনিসের অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিতে আসছিলেন সেই সময় চলে হামলা। ঘটনাস্থলেই ১৪ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের এক আত্মীয় আওয়াদ আবু আগাল্লা বলেন, “গাজার কোনও জায়গাই এখন আর নিরাপদ নয়। সর্বত্র বোমাবর্ষণ চলছে। উত্তরে দক্ষিণে সর্বত্র।” শুধু তাই নয়, জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে খাবার নিতে আসা সাধারণ নাগরিকদের উপর গুলি চালানো হয়েছে। যার জেরে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল এবং প্যালেস্টিনিয় রেড ক্রিসেন্ট দেশের অন্যান্য অংশে আরও ৬ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত করেছে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে গাজার ভয়াবহতার মধ্যেই সেখানে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেস ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ, অর্থাৎ প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন এবং মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। প্রায় আড়াই মাস ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখার জেরে এই ভয়াবহ অবস্থা। চাপের মুখে পড়ে ইজরায়েল সরকার সেখানে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিয়েছে ঠিকই তবে সেখানেও ওঁত পেতে রয়েছে মৃত্যু। তবে গাজায় দুর্ভিক্ষের কথা মানতে নারাজ ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দাবি, যুদ্ধের সময় পর্যাপ্ত সাহায্যের অনুমতি দেওয়া হবে। উলটে ইজরায়েলের দাবি, পণবন্দিদের অনাহারে রেখেছে হামাস।
এই ভয়াবহতার মাঝেই গাজা দখলের প্রস্তুতি জোরদার করছেন নেতানিয়াহু। ইজরায়েল সেনা জানিয়েছে, তাদের সেনারা ইতিমধ্যেই গাজা শহরের জাইতুন এলাকা-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে এবং আগামী দিনে বড়সড় সামরিক অভিযান শুরু হতে চলেছে। সবমিলিয়ে নরকের রূপ নিয়েছে গোটা গাজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.