শহিদ দুই জওয়ান। বাঁদিকে পলাশ ঘোষ ও ডানদিকে সুজয় ঘোষ।
কল্যাণ চন্দ, মুর্শিদাবাদ: ষষ্ঠীর সকালে ছুটি কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান ভারতীয় সেনার প্যারা কমান্ডো পলাশ ঘোষ। ভাইকে এগিয়ে দিয়েছিলেন দাদা। তারপর কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু বুধবার সেনাবাহিনীর বিশেষ সার্চ অপারেশনের সময় থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁকে। অবশেষে শুক্রবার বাড়িতে খবর এল শহিদ হয়েছেন পলাশ। একা পলাশ নয়, তুষারঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বীরভূমের রাজনগর কুন্ডিরার নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুজয় ঘোষেরও। শেষবার দাদাকে ফোন করে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই নিখোঁজ। শুক্রবার খবর আসে আর নেই সুজয়। বাংলার দুই জওয়ানের অকালমৃত্যুতে শোকের ছায়া রাজ্যে।
বুধবার কাশ্মীরের দক্ষিণ অনন্তনাগের গাদুলে আতঙ্কবাদী নিকেশ অপারেশন চলায় সেনাবাহিনী। সেই অভিযান দলে ছিলেন বাংলার দুই প্যারা কমান্ডো। ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষ (৩৮) ও ল্যান্স নায়েক সুজয় ঘোষ (২৮)। অভিযানের সময় তুষারঝড়ের মধ্যে পড়েন তাঁরা। নিখোঁজ হয়ে যান পলাশ ও সুজয়।
দুই প্যারা কমান্ডোর খোঁজে তল্লাশি চালাতে থাকে সেনাবাহিনী। বরফাবৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পলাশকে। আইসিইউতে থাকাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। পলাশের বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, দুই কন্যা ও স্ত্রী। শনিবার সকালে এই খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। দাদা মৃগাঙ্ক ঘোষ জানিয়েছেন, “ষষ্ঠীর দিন টোটোতে ভাইকে এগিয়ে দিই। ও যে আর ফিরবে না, ভাবতে পারিনি।”
সুজয়ের বাবা কৃষক। বাড়িতে রয়েছেন দাদা। ২০১৮ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। ২৮ বছর বয়সী এই জওয়ান প্যারা কমান্ডার ৫ গ্রুপের এই সৈনিক ছিলেন। দাদা মৃত্যুঞ্জয়কে ফোন করে জানিয়েছিলেন অভিযানে যাচ্ছেন এখন ক’দিন কথা হবে না। সেই কথাই যে শেষ কথা তা কে জানত?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.