Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jangipur

রোজ ৩ কেজি চালের ভাত, ৩ ডজন রুটি! ১৪ বছরের জিশানের খিদে মেটাতে উদ্বেগ পরিবারে

উসকে দিল লোকমানের স্মৃতি।

3 kg of rice, 3 dozen rotis daily! Family worries about satisfying hunger of 14-year-old Zeeshan of Jangipur

খেতে ব্যস্ত ওই কিশোর। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:August 23, 2025 2:28 pm
  • Updated:August 23, 2025 2:30 pm   

শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: তিন কেজির চালের ভাত খায় সে। বয়স ১৪ বছর। ওজন ১৪০ কেজি। নবম শ্রেণির ছাত্র জিশান শেখ। আর বাড়ির ছেলে এই খিদে মেটাতে হিমশিম পরিবার। কিন্তু কারণটা কী? আসলে এক বিরল রোগে আক্রান্ত কিশোর জিশান। বাবা মুনসাদ আলি পেশায় কাঠ মিলের শ্রমিক। একা হাতের আয়ে একদিকে ছেলের খিদে মেটানো, অন‌্যদিকে চিকিৎসা। কী ভাবে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। একসময় বাংলাতেই লোকমান বলে এক কিশোর এমন বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। তারও খিদে ছিল প্রচুর। পরে সেই লোকমান অকালেই চলে যায়। 

Advertisement

সাগরদিঘির কাবিলপুর গ্রামের মুনসাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। পরিবারের ছোট ছেলে জিশান শেখ। জন্মেছিল স্বাভাবিক শিশুর মতোই। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকে দেহের ওজন। আর বাড়তে থাকে খিদেও। এখন ওজন দাঁড়িয়েছে ১৪০ কেজিতে। প্রতিদিন প্রায় তিন কিলো চালের ভাত লাগে জিশানের জন্য। রুটি হলে একসঙ্গে তিন ডজন দরকার। সঙ্গে মাছ, মাংস বা ডিমের মধে‌্য একটা না একটা থাকতেই হবে। নয়তো অশান্তি।শুধু তাই নয়, শরীরের ওজনের কারণে কোনও দোকানে রেডিমেড পোশাক মেলে না। যত দিন যাচ্ছে স্বাভাবিক হাঁটাচলাও করতে পারছে না জিশান। ফলে শুয়ে বসেই তার জীবন কাটে। ঘন্টার পর ঘন্টা গঙ্গা নদীতে গলা অবধি ডুবিয়ে বসে থাকে সে। খিদে পেলেই আসে বাড়িতে।

জিশানের বাবা মুনসাদ বলেন, ‘‘সামান্য কাঠ মিলের দিনমজুরের কাজ করি। যা অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়েই চলে সংসার। ঠিকমতো ছেলের খাবার জোগান দিতে পারি না। সেখানে কীভাবে এই রোগের চিকিৎসা করাব, ছেলেকে আগামী দিনে কীভাবে বাঁচাব তাও বুঝে উঠতে পারি না। চিকিৎসকরা ওকে ব্যায়াম এবং হাঁটার কথা বলেছেন। খাবার এর পরিমাণও কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ছেলে কোনওটাই শোনে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার না পেলেই বাড়িতে রণক্ষেত্র বানিয়ে দেয় সে।’’ জিশান জানিয়েছে, ‘‘প্রিয় খাবার বিরিয়ানি এবং মাংস। একসঙ্গে তিন কেজি মাংস ও দুই কেজি চালের বিরিয়ানি খেতে পারব। আমাকে নিয়ে অনেকেই মজা করে। কিন্তু আমি খেতে ভালবাসি। আমাকে সারাদিনে চারবার খাবার দিতেই হবে।’’

জিশানের মা পিয়ারুন বিবির জানান, ‘‘আমি নিজে হার্টের রোগী। কিছুদিন আগেই বাইপাস সার্জারি করিয়েছি। স্বামী আমার চিকিৎসা ও ছেলের চিকিৎসা পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকারের কাছে আমার আবেদন আমার ছেলের দিকে তাকিয়ে যদি কোনও সাহায্য করে। তিন বছর বয়স থেকে ওর এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আমাদের নজরে আসে। ৯ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও সুরাহা হয়নি। ওর যখন খিদে পায় তখন কী করবে বুঝে উঠতে পারে না। খুব অস্থির হয়ে ওঠে। ও খেতে খুব ভালোবাসে। আমি তো মা, নিজে খাবার না খেয়েও ছেলের মুখে তুলে দিই। কিন্তু জানি না এভাবে কতদিন।’’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ