রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: জেলা সভাপতি কে? তা নিয়ে অধীর গোষ্ঠী বনাম বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। জেলা হাসপাতালের পরিষেবা এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ একাধিক দাবিতে আলিপুরদুয়ারে লাগাতার অনশন চালাচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। আজ মঙ্গলবার এই অনশন পঞ্চম দিনে পড়ল। আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে এদিন প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী একটি ভিডিও বার্তা দেন। আর সেই বার্তায় বিদায়ী জেলা সভাপতিকে ‘বর্তমান’ বলে উল্লেখ করেন। আর সেই বার্তা ঘিরেই শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের নিযুক্ত জেলা সভাপতিকে মানছেন না অধীর চৌধুরী?
জেলা হাসপাতালের পরিষেবা এবং পরিকাঠামো নিয়ে ৯ দফা দাবিতে আমরণ অনশন চালাচ্ছেন কংগ্রেস নেতাকর্মীরা। বিদায়ী সভাপতি শান্তনু দেবনাথের নেতৃত্বে এই অনশন চলছে। আজ মঙ্গলবার, অনশন পঞ্চম দিনে পড়লেও এখনও পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কোনও কর্তা সেখানে যাননি। এই অবস্থায় আলিপুরদুয়ারে কংগ্রেস নেতাদের আমরণ অনশন নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা দেন অধীর চৌধুরী। যেখানে সরকারি হাসপাতালগুলির শোচনীয় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরার পাশাপাশি এহেন কর্মসূচির উল্লেখ করেন। যেখানে বিদায়ী সভাপতি শান্তনু দেবনাথকে জেলা সভাপতি বলে উল্লেখ করেন। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেসের সভাপতি করা হয় মৃন্ময় সরকারকে। যদিও প্রথমদিন থেকে তাঁকে ক্ষোভ বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
অধীর বলেন, ”উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার হাসপাতালের দুরবস্থা, রোগীদের অত্যাচারের শিকার হতে হয়। বঞ্চিত হতে হয় চিকিৎসা থেকে। তার প্রতিবাদে আলিপুরদুয়ার জেলার কংগ্রেসের সভাপতি শান্তনু দেবনাথ প্রতিবাদ জানিয়ে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে আমরণ অনশন চালাচ্ছেন। চারদিন ধরে তিনি অনশন করছেন।” আর এহেন মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
গত রবিবার খোদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে মৃন্ময় সরকারকে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। ঝাঁটা হাতে তাঁকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। এমনকী মারামারি পর্যন্ত হয়। অভিযোগ ওঠে, বিক্ষোভকারীরা শান্তনু দেবনাথ অনুগামী। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে চলে আসে কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল। যদিও নয়া সভাপতি মৃন্ময় সরকার সবাইকে নিয়েই চলার বার্তা দেন। কিন্তু এরপরেও যে জেলা কংগ্রেসে কোন্দল থামেনি তা এদিনের বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। যদিও এহেন ভিডিও বার্তা প্রসঙ্গে মৃন্ময় সরকারের জবাব, ”সকলের সহমতেই প্রদেশ আমাকে সভাপতি করেছে। কাজ করে যাব।”
অন্যদিকে আমরণ অনশনে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। যদিও এহেন অনশন কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তাঁর কথায়, হাসপাতালের পরিকাঠামো যথেষ্ট ভালো। এই বিষয়ে পালটা কংগ্রেসকেই আক্রমণ শানান তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে অনশন মঞ্চে যদি মরতে হয় মরতে রাজি বলে সাফ জানিয়েছেন অনশন মঞ্চে থাকা কংগ্রেস নেতা শান্তনু দেবনাথ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.