অর্ণব দাস, বারাকপুর: রহড়ার আবাসন থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯০৫ রাউন্ড কার্তুজ। যা রীতিমতো ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে তদন্তকারীদের। এত সংখ্যক গোলাবারুদে অনায়াসে তিন-চার ঘণ্টা ধরে ফায়ারিং করা যেত! এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। যদি তেমনটা হত তার ফল হত মারাত্মক। তাই এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্রভাণ্ডার উদ্ধার পর প্রশ্ন উঠছে শুধুই পাচারের ছক ছিল নাকি বৃহৎ কোনও ষড়যন্ত্র করেছিল মধুসূদন মুখোপাধ্যায়। জিজ্ঞাসাবাদে এই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একইসঙ্গে উদ্ধার হওয়া ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্রর মধ্যে ছিল ৬টি ইম্প্রভাইস বন্দুক। বাকিগুলি কোম্পানি মেড। এই কোম্পানি মেড বন্দুক একমাত্র লাইসেন্স থাকলে তবেই কিনতে পারা যায়। যা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। উদ্ধার হওয়া ১টি পাম্প অ্যাকশন গান, ১টি বোল্ট অ্যাকশন রাইফেল, ২টি ডিবিবিএল রাইফেল, ১টি এসবিবিএল রাইফেল, ৩টি রিভলবার মিলিয়ে মোট ৮টি কোম্পানি মেড আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত গোয়েন্দারা। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কালোবাজারেও যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। খড়দহ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রিজেন্ট পার্ক এলাকার পাঁচতলা আবাসনের নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্রভান্ডারের চক্রের শিকড় পর্যন্ত দ্রুত পৌঁছতে চাইছে পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার বারাকপুর আদালত অভিযুক্ত মধুসূদনকে ১০ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তাকে হেফাজতে পাওয়ার পর উপরোক্ত প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হবে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
ওই আবাসনে তল্লাশির সময় বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার ছাড়াও নগদ ১লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। ২৪৮গ্রাম সোনা, ৩০গ্রাম রুপো উদ্ধার হয়েছে। তাই অস্ত্র পাচারের দিকটিও উড়িয়ে দিতে পারছন না তদন্তকারীরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ধৃতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান চারু শর্মা জানিয়েছেন,”তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল, কতদিন ধরে মজুদ ছিল, পাচার নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল, তাও জানার চেষ্টা চলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.