ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত সরকার যবে নিয়েছে, তবে থেকেই আনন্দে আত্মহারা মদ্যপরা। আনন্দের চোটে তাদের মাথা থেকেই বেরিয়ে গিয়েছে সামাজিক দূরত্বের কথা। মদের দোকানের বাইরে চোখে পড়ছে দীর্ঘ লাইন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব তো দূরে থাক, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানুষ। এই সমস্যার সমাধানে এবার নতুন পথ দেখাল মধ্যমগ্রামের একটি মদের দোকান।
করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। দিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় খোলা থাকছে দোকান। অনেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার যখন লকডাউনের ৪২ দিন পর মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিল, তখন সমালোচনা হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু তারপরই দেখা যায় ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি হালে পানি পেয়েছে। মদ্যপদের দৌলতেই গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিন্তার ভাঁজ ছিল প্রশাসনের কপালে। কারণ মদ কিনতে আসা কোনও লোকই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। প্রতিটি দোকানের সামনে পড়ছে লম্বা লাইন। আর সেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনও বালাই নেই। এই পরিস্থিতি রুখতে মধ্যমগ্রামের এই মদের দোকানে চালু হল থার্মাল স্ক্রিনিং।
অন্যান্য মদের দোকানের মতো এক্ষেত্রেও দোকান খোলার আগে দোকানের দু’দিকে লম্বা লাইন পড়ে। প্রতিটি দিকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত লাইনে ক্রেতাদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এই ভিড়ের ফলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। দোকানের মালিক সোমনাথ পাল জানিয়েছেন, দোকানে যাঁরা মদ কিনতে আসছেন, প্রত্যেকেরই থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। দেহের তাপমাত্রার হেরফের দেখা দিলেই তাঁকে আর মদ বিক্রি করা হচ্ছে না। তাঁকে পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে দোকানের কর্মচারীরাই এই স্ক্রিনিং করছেন।
তবে মধ্যমগ্রামের এই দোকানে এমন ব্যবস্থা দেখা গেলেও আর কোথাও এমন ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। অন্যান্য দোকানের বাইরে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পুলিশ বা দোকানের কর্মীরা বললেও কথা শুনছে না অনেকেই। বেশি ভিড় হয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় নির্ধারিত সময়ের আগেই দোকান বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। তা সত্ত্বেও হুঁশ ফেরেনি মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যমগ্রামের এই দোকান নতুন দিশা দেখাল। তাই সোমনাথবাবুর মতে, রাজ্যের সব দোকানেই এমন বন্দোবস্তু করা উচিত। কারণ যেভাবে ক্রেতারা দাঁড়াচ্ছেন তাতে তাঁদের মধ্যে তো বটেই, দোকানের কর্মচারীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ। সেক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ফলে কিছুটা সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.