সুমন করাতি, হুগলি: বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে জ্যান্ত কবর দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মদ্যপ যুবকের স্বীকারোক্তি, ‘মাটিতে পুঁতে দিয়েছি।’ হুগলির কোন্নগরের কানাইপুর এলাকার এই ঘটনায় দিনভর তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কিশোরীকে কোথাও আটকে রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা। মেয়েকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে মরিয়া পরিবার। প্রতি মুহূর্ত কাটছে চরম উদ্বেগে। ওই যুবক আপাতত পলাতক। কিশোরীর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। তবে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ কানাইপুরের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী যুবক অসীম মজুমদার। তারপর থেকেই খোঁজ মিলছিল না তার। এদিকে, ওই যুবক মদ্যপ অবস্থায় সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে জানায়, কিশোরীকে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে। তারপর থেকে সে পলাতক। পরিবার সারারাত ধরে কিশোরীকে খোঁজাখুঁজি করেছে, কিন্তু পাওয়া যায়নি কোথাও। তখন অসীম নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধেদ থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
পুলিশ অসীমের মা-বাবাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। যুবকের মা সরযু মজুমদার বলেন, ”ছেলে জোগাড়ের কাজ করে। গতকাল মাটি কাটতে যাবে বলে পাশের বাড়ির মেয়েটাকে ডেকে নিয়ে যায়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে। তারপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কোথায় যাচ্ছে, সেটা বলেনি। আমি আটকাবার চেষ্টা করেছি। কথা শোনেনি। আমি পরিচারিকার কাজ করি। সারাদিন বাইরেই থাকি। ছেলে কী করে না করে জানি না। ছেলে এরকম ছিল না। মদের নেশা হওয়ার পর থেকেই এই সমস্ত করছে। ওর স্ত্রী তিন বছর আগে ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। বাড়িতে আমরা স্বামী-স্ত্রী ছেলে আর নাতি থাকি।”
কিশোরী যে স্কুলে পড়াশোনা করে, সেই স্কুলের টিচার ইনচার্জ সুবীর ঘোষ বলেন, ”খাবারের লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, ওই যুবক কিশোরীকে কোথাও গুম করে দিয়েছে অথবা কোথাও আটকে রেখেছে।” কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভবেশ ঘোষ বলেন, ”গতকাল বিকেল চারটে থেকে মেয়েটাকে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিবেশী এক যুবককের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আমরা পুলিশ প্রশাসন কেউ বলেছি। ওই যুবকের খোঁজ চালাতে। পাশাপাশি মেয়েটাও যাতে বাড়ি ফিরে আসে, তার জন্য চেষ্টা চলছে। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালাচ্ছে। প্রকৃত কী ঘটনা ঘটেছে, সেটা যতক্ষণ না তদন্ত হয়, কিছু বলা যাবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.