Advertisement
Advertisement
Siliguri

কালিম্পংয়ে পাহাড় ভেঙে নামল বড় বড় পাথর, ভূমিধসে ফের অবরুদ্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক

এদিনের ঘটনায় রীতিমতো হতবাক আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারাও।

National Highway 10 blocked again by landslide

ফাইল চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:July 18, 2025 8:46 pm
  • Updated:July 18, 2025 8:46 pm   

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: বৃষ্টি নেই। নীল আকাশ। অথচ প্রখর রোদের তাপে মাটি এতটাই আলগা হয়েছে, যে পাহাড়ের একাংশ গাছপালা, বোল্ডার নিয়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে নামল রাস্তায়। শুক্রবার সকালে এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল কালিম্পংয়ের বিরিকদারা। ফের ভূমিধসে অবরুদ্ধ হল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এদিনের ঘটনায় রীতিমতো হতবাক আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারাও। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার প্রবল বৃষ্টির জেরে ভূমিধসে সিকিমের গিয়ালশিং জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত। শনিবার থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। জেলাগুলিতে ‘কমলা’ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। রয়েছে ভূমিধসের সতর্কতাও।

Advertisement

এদিন সকালে হনুমান ঝোড়ার বিরিক দারার কাছে আচমকা পাহাড়ের বিরাট অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে নামতে শুরু করে। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি, যানজট। জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে যাত্রীদের বিকল্প পথ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। ভূমিধসের ফলে সেভক এবং রংপোর মধ্যে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “কল্পনাতীত ঘটনা। বৃষ্টি নেই। প্রখর রোদ উঠেছে। কে জানবে এই সময় ধস নামবে! বরাত ভালো বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।” তিনি জানান, রোদে পাহাড়ের মাটি শুকিয়ে ঝুরঝুরে হয়েছে। সামান্য ফাটল দেখা দিতে সেটা গড়িয়ে নামছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সেভক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার জাতীয় সড়কের একাধিক অংশ ভূমিধসপ্রবণ। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার ২৯ মাইল, কালিঝোরা, শ্বেতীঝোরা, সেলফিদারা, বিরিকদারা, লিউখুবীর, মেলি এবং ভালুখোলা রয়েছে। এদিন ভূমিধসে রাস্তা অবরুদ্ধ হতে যানবাহন রাংপো থেকে মুনসং-১৭ মাইল-আলগড়া-লাভা-গোরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি এবং কালিম্পং থেকে রেলি-সামথার-পানবু হয়ে শিলিগুড়ি রুট ব্যবহার করছে। পণ্যবাহী যানবাহন এবং বাস রেশি, পেদং, আলগড়া, লাভা, গোরুবাথান হয়ে শিলিগুড়িতে যাতায়াত করছে। শুধু বিরিকদারায় নয়। বৃহস্পতিবার সকালে সিকিমের গিয়ালশিং জেলার নাম্বু-সিন্দ্রাবুং জিপিইউ-এ ভূমিধস নামে। চুংরি বস্তি এবং বিওপি ধোবানের মধ্যে রাস্তা ভূমিধসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই রুট এসএসবি জওয়ান, ট্রেকার এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা ব্যবহার করে। সাকিম ধোবান খোলা নদীর কাছে একটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু নয়াপতল, ইয়াম্বুং, সিলসিলি সীমান্ত এবং আশেপাশের গ্রামগুলির সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল। সেতুটি ভেসে গিয়ে এলাকাগুলো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী কাল শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা হলে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে সেই কথাই প্রশাসন মহলে ঘুরছে। আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠে মৌসুমি বায়ুর প্রবাহ এখন বিকানের, সিকারের মধ্য দিয়ে উত্তর-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, সিধি, ডাল্টনগঞ্জ, পুরুলিয়া এবং সেখান থেকে পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব দিকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ জুলাই উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমি প্রবাহ এবং বাতাসে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্পের উপস্থিতির কারণে ২১শে জুলাইর মধ্যে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি চলবে পাহাড়ি জেলাগুলিতে। আজ, শনিবার থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায়। আজ, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস হয়েছে কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ছাড়াও রবিবার তেড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে। ২১ জুলাই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর ও মালদহে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের জেরে সমতলে হড়পা বান এবং পাহাড়ে ভূমিধসের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বৃষ্টির জন্য কমতে পারে দৃশ্যমানতাও। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ